বাবরি মসজিদ রায়ে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর ক্ষোভ

বাবরি মসজিদ রায়ে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর ক্ষোভ

বাবরি মসজিদ রায়ে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর ক্ষোভ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : রাজ্য জমিয়তে উলামা হিন্দের সভাপতি ও রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বাবরি মসজিদ রায়ে লালকৃষ্ণ আদবাণী, মুরলী মনোহর জোশী থেকে শুরু করে বিজেপি ও আরএসএসের নেতারা বেকসুর ঘোষিত হওয়ার ঘটনায় নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এর ফলে বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হবে এবং তার পরিণতিতে নানা ঘটনা ঘটতে পারে।

জমিয়তের রাজ্য সভাপতি এবং রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বুধবার বলেন, প্রকাশ্যেই আদবাণী বাবরি ধ্বংস এবং রামমন্দির বানানো নিয়ে কী বলেছিলেন, তা সকলেরই মনে আছে। তার পরেও আদালতে কারও দোষ প্রমাণিত হল না, এই ঘটনা আশ্চর্যের এবং হতাশাজনক। এ দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা এর ফলে ধাক্কা খাবে। তার জেরে নানা রকম ঘটনাই ঘটতে পারে।

তবে হতাশা বা ক্ষোভের বশে কেউই যেন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটান, সেই আবেদনও জানিয়েছেন রাজ্য জমিয়তে উলামা হিন্দের সভাপতি ও রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী।

প্রসঙ্গত, অযোদ্ধার বহুল আলোচিত বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায়ে অভিযুক্ত ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও শীর্ষ নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানী, মুরালি মনোহর যোশী ও উমা ভারতী-সহ অভিযুক্ত ৩২ আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছেন দেশটির আদালত।

২৮ বছর আগে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত আসামিদের খালাস দিয়ে উত্তরপ্রদেশের লখনৌউয়ের বিশেষ আদালত বলেছেন, মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাটি পূর্ব-পরিকল্পিত ছিল না।

ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) তৎকালীন নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানীর নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় দফায় দফায় রথযাত্রা হয়। এই রথযাত্রা থেকে ষোড়শ শতাব্দীর অন্যতম এই মুসলিম স্থাপনায় হামলা চালানো হয়।

কট্টরপন্থী উগ্র হিন্দুত্ববাদী করসেবকরা মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার পরপর দেশটিতে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। এতে প্রাণ যায় প্রায় ৩ হাজার মানুষের। উত্তরপ্রদেশের এই মসজিদ ধ্বংস বদলে দেয় ভারতের রাজনীতি। দেশটিতে কট্টর হিন্দুত্ববাদীর উত্থানের নেপথ্যে বড় অনুঘটক হিসেবে কাজ করে এটি।

মসজিদ ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও শীর্ষ নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানী, মুরালি মনোহর যোশী, সাবেক মন্ত্রী উমা ভারতী ও কল্যাণ সিংয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। প্রায় আড়াই যুগ পর বুধবার এই মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।

উল্লেখ্য, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড ভারতের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় সব আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়ায় এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বোর্ডের সিনিয়র আইনজীবী জাফারইয়াব জিলানি বলেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়ার দিন কীভাবে অভিযুক্তরা মঞ্চ থেকে উস্কানিমূলক ভাষণ দিচ্ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা তা জানিয়েছেন । আইপিএস অফিসার ও সাংবাদিকরাও এ বিষয়ে বর্ণনা দিয়েছেন।

জিলানি বলেন, বিশেষ সিবিআই আদালত তথ্য প্রমাণকে উপেক্ষা করে রায় দিয়েছে। তাই এর বিরুদ্ধে মুসলমানরা আপিল করবে। মুসলিম ল’ বোর্ডও আপিল করতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।

জানা যায়, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেছিল উগ্রপন্থী হিন্দু কর সেবকরা। প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি, মুরলিমনোহর জোশী, উমা ভারতীর মতো নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে মসজিদ ভাঙার ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা ও উসকানির অভিযোগ আনা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *