চাঁদাবাজি পথে পথে
সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য রোধে এগিয়ে আসুন
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : এখন চলছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান। এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে দেশবাসী। দেশের মানুষ যেনো স্বস্তির নিশ^াস ফেলেছে দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার করায়। আমরা আশাবাদি, দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে সরকারের আপসহীন মনোভাব সবসময় অটুট থাকবে। এখন পথে পথে চাঁদাবাজিতে পরিবহন সেক্টর খুবই নাজুক পরিস্থিতি নিয়ে এগিয়ে চলেছে।
স্বভাবতই দুর্নীতি আর অনিয়মের অন্যতম শীর্ষ খাত পরিবহন নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সরকার নজর দেবে এমনটিই আশা করছে দেশের মানুষ। পরিবহন চাঁদাবাজির সঙ্গে পরিবহন মালিকদের সমিতি, শ্রমিক সংগঠন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রতিটি এলাকার রাজনৈতিক টাউট জড়িত। জড়িত জনপ্রতিনিধি পরিচয়ের আড়ালে গণবিরোধী ভূমিকা পালনকারী কিছু লোকও। পরিবহন খাতে গাড়ির মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নামেই সিংহভাগ চাঁদাবাজি ঘটলেও সড়ক, মহাসড়ক, টার্মিনাল-স্ট্যান্ডে বিভিন্ন নামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপও প্রকাশ্যেই করছে চাঁদাবাজি। হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক বিভাগ ও থানা পুলিশের একাংশও দীর্ঘদিন থেকেই চাঁদাবাজিতে জড়িত। পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলো চাঁদা নেয় শ্রমিককল্যাণের নামে। ট্রাফিক সার্জেন্টরা যে চাঁদা তোলেন তা অভিহিত হয় মাসহারা হিসেবে।
এ ছাড়া আছে রাস্তা ক্লিয়ার ফি, ঘাট ও টার্মিনাল সিরিয়াল, পার্কিং ফি নামের চাঁদাবাজি; যা পরিবহন খাতের নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন রুটের প্রায় ১৫ হাজার বাস-মিনিবাস থেকে ২৯টি খাতে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ ওপেন সিক্রেট; যা পরিবহন খাতের রুটিন চাঁদা হিসেবেই পরিচিত। এ ছাড়া কোনো রুটে গাড়ি অন্তর্ভুক্ত করা, দুর্ঘটনাসহ অন্যান্য ঝুট-ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে চাঁদাবাজ নেতাদের হাতে চাহিদামাফিক মোটা অঙ্কের টাকা তুলে দিতে হয়। পরিবহন খাতে যে চাঁদাবাজি হয়, তা সরাসরি যাত্রী কিংবা নিত্যপণ্যের ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করা না হলেও এ অর্থ প্রকারান্তরে তাদের ওপরই চাপানো হয়। সরকার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছে পরিবহন খাতে তার প্রভাব এখনো পড়েনি বললেই চলে।
চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য রোধে পরিবহন চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে সক্রিয় করতে হবে। স্বীকার করতেই হবে বিষয়টি অত সোজা নয়। কারণ চাঁদাবাজির ভাগ যারা ভোগ করে তার মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য জড়িত বলে মনে করা হয়। এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর মনোভাব থাকলেই সংশ্লিষ্টদের শুভবুদ্ধি উদয়ে ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।