২৯শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ৮ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

ঈদের দিনে করণীয়ঃ সংক্ষিপ্ত বিবরণ

যারওয়াত উদ্দীন সামনূন

আগামীকাল বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলমানদের প্রধান ও সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। এ দিনটির প্রধান অনুষঙ্গ ঈদের নামায আদায়সহ অন্যান্য করণীয়গুলো চলুন আমরা সংক্ষেপে জেনে নেই।

  • ঈদ-পূর্ব রাত আমলের মাঝে কাটানো

বাংলাদেশীদের জীবনে ঈদ উৎসবের অন্যতম একটি অংশ হলো ঈদের আগের রাত, যা ‘চাঁদ রাত’ নামে পরিচিত। এ রাতে শরীয়তের সীমায় উৎসব করার অনুমতি থাকলেও আমাদের মূলত এ রাতটি আমলে কাটানোই উচিৎ। একাধিক হাদীসে এ রাতে আমল করতে মানুষকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

  • ঈদের সকালে গোসল করা
  • সুগন্ধি–আতর ব্যবহার করা
  • নামাযের পূর্বে আহার করা

এক্ষেত্রে ১টি খেজুর হতে পারে উত্তম আহার্য। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেজোড় সংখ্যায় খেজুর খেয়ে ঈদের নামাযে যেতেন বলে বর্ণিত হয়ে হাদীসে। রমজানের একটি মাস কাটানোর পর হাতের নাগালেই নিশ্চয় রয়েছে সকলের প্রিয় এই ফলটি। তবে, এ বিধানটি কেবল ঈদুল ফিতরের জন্য।

  • সুন্দর ও উত্তম পোষাক পরিধান করা

নতুন জামা-ই পরতে হবে এমন নয়, তবে নিজের সংগ্রহের সবচেয়ে সুন্দর ও সর্বোত্তম পোষাকটিই ঈদের দিন পরা উচিৎ।

  • এক পথ দিয়ে ঈদগাহে যাওয়া, অপর পথ ধরে ফিরে আসা
  • পায়ে হেঁটে নামায পড়তে যাওয়া
  • তাকবীর বলতে বলতে ঈদগাহে যাওয়া
  • ঈদগাহে নামায আদায় করা। একান্ত নিরুপায় হলে তবেই কেবল মসজিদে
  • ঈদের নামাযের পূর্বেই সদকাতুল ফিতর আদায় করা ( যেন দুঃখীজনরাও ঈদের আনন্দে শামিল হতে পারে।) 
  • ঈদের নামাযের পূর্বে কোনো নামায না পড়া
  • উপযুক্ত বয়সী শিশুদের ঈদের নামায পড়তে ঈদগাহে নিয়ে যাওয়া
  • পরস্পরে অভিবাদন জানানো ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিমিয় করা
  • ঘরের কাজে সহায়তা করা

 

ঈদের নামায আদায়

ঈদের নামাযের ক্ষেত্রে আমাদের কেবল ২টি জিনিস মনে রাখতে হবে।

১. ঈদের নামাযে ইকামত দেয়া হয় না। তাই নামায শুরুর জন্য প্রস্তুত থাকা।

২. অতিরিক্ত তাকবীর

প্রথম রাকআতঃ

প্রথম রাকাআতের শুরুতে মোট ৪টি তাকবীর— ১ম তাকবীরের পরে ছানা পড়তে হবে। পরের ৩টি তাকবীর অতিরিক্ত।

হাত বাঁধতে হবে ১ম তাকবীরের পর এবং, ৪র্থ তাকবীরের পর।

দ্বিতীয় রাকাআতঃ

দ্বিতীয় রাকাআতের শুরু হবে স্বাভাবিকভাবেই। রুকুতে যাওয়ার সময় ৩টি তাকবীর অতিরিক্ত দিতে হবে, এখানে হাত ছেড়ে দেয়া হবে। ৪র্থ তাকবীরে রুকুতে চলে যেতে হবে।

ঈদের নামাযে সাধারণ আমরা অতিরিক্ত তাকবীরের হিসাবটা বুঝে উঠতে পারি না। তাই আরও সংক্ষেপে আবারও বলছি,

মনে করি— প্রথম রাকাতের ১ম তাকবীরটি ছানা পড়ার জন্য, তাই হাত বাঁধতে হবে।

২ ও ৩ নম্বর তাকবীরের পর কোনো কাজ নেই, তাই হাত ছেড়ে দিবো।

৪র্থ তাকবীরটি সূরা-কেরাত পড়ার জন্য, তাই এখানেও হাত বাঁধতে হবে।

—–

দ্বিতীয় রাকাআতে রুকুতে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত ৩টি তাকবীর, এখানে কোনো কাজ নেই তাই হাত ছেড়ে দিবো।

৪র্থ তাকবীরটি রুকুতে যাওয়ার জন্য, তাই সোজা রুকুতে চলে যাবো।

 

ঈদের দিনটি আমাদেরকে দেয়া হয়েছেই শরীয়তের সীমায় থেকে আনন্দ করার জন্য। তাই সব দুঃখ আমরা একপাশে সরিয়ে রাখবো। নিজেও আনন্দিত থাকবো, অন্যকেও আনন্দে রাখবো। সারা বছরই প্রতিবেশী ও গরীব-দুঃখীদের খোঁজখবর রাখা আমাদের কর্তব্য, ঈদের দিন এই দায়িত্ব আরও বড় হয়ে উপস্থিত হয়। তাই আমরা সবাই সবার প্রতি লক্ষ্য রাখবো। ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো৷ আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন এবং সব আমল কবুল করে নিন, আমীন।

 

লেখক : সহকারী সম্পাদক, পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম

শেয়ার করুন


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ১৯৮৬ - ২০২৩ মাসিক পাথেয় (রেজিঃ ডি.এ. ৬৭৫) | patheo24.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com