পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আরেক ধাক্কায় টাকার মান ৫০ পয়সা পর্যন্ত কমেছে। গতকাল মঙ্গলবার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার যা ছিল ৯২ টাকা ৯৫ পয়সা। সেই হিসাবে এক দিনের ব্যবধানে টাকার মান কমল ৫০ পয়সা।
এদিকে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার ঠিক রাখতে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত সোমবার কয়েকটি ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা হয় আট কোটি ৮০ লাখ ডলার। গতকাল চার কোটি ২০ লাখ ডলার বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চার হাজার ৮৭ কোটি ডলার। টাকার মান আরেক দফা অবমূল্যায়নের কারণে আমদানি ব্যয় আরো বাড়বে, আর লাভবান হবেন রপ্তানিকারকরা। সাধারণত রপ্তানিকারকদের সুবিধা দিতেই স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন করা হয়।
এদিকে গত দুই মাসের ব্যবধানে ১২ দফা বাড়ানো হয়েছে ডলারের দাম। একই সময় টাকার মান কমেছে সাত টাকা। এর আগে গত ২৯ মে দেশে ডলারের এক রেট ৮৯ টাকা বেঁধে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই রেট উঠিয়ে দিয়ে ডলারের দর বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর ৯ বার বেড়েছে ডলারের দাম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার প্রতি ডলার ৯৩.৪৫ টাকা দরে ব্যাংকগুলোর কাছে চার কোটি ২০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত মাসে ডলারের দাম বেড়ে খোলাবাজারে ১০২ টাকা অতিক্রম করে রেকর্ড গড়েছিল। পরে কিছুটা কমে বর্তমানে খোলাবাজারে ৯৮ থেকে ৯৯ টাকায় ডলার বেচাকেনা হচ্ছে।
ডলারের দাম পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এর পর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়, যা এখনো অব্যাহত আছে। পরে সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকারস, বাংলাদেশের (এবিবি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ মে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৯ টাকা বেঁধে দেয়। আর আমদানিকারকদের কাছে বিক্রির জন্য বিসি সেলিং রেট নির্ধারণ করা হয় ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা। যদিও ব্যাংকগুলো আন্ত ব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ৮৯ টাকা ৮০ পয়সার প্রস্তাব করেছিল।
বাজার স্থিতিশীল না হওয়ায় ডলারের এক রেট উঠিয়ে দিয়ে গত ২ জুন আরো ৯০ পয়সা বাড়িয়ে দাম ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। গত ২১ জুন ডলারের দাম ছিল ৯২ টাকা ৯০ পয়সা এবং পরদিন তা বেড়ে ৯২ টাকা ৯৫ পয়সায় বিক্রি হয়েছে।