ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু

ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে আজ থেকে দেশে প্রথমবারের মতো ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রদান শুরু হচ্ছে। সোমবার (২১ জুন) রাজধানীর তিনটি কেন্দ্রে ফাইজারের টিকা দেয়া হবে। প্রতিদিন ১২০ জনকে দেয়া হবে এ টিকা। সেক্ষেত্রে যারা আগে থেকে নিবন্ধন করে ছিলেন, কিন্তু টিকা দিতে পারেননি তারা অগ্রাধিকার পাবেন।

রবিবার (২০ জুন) করোনা বিষয়ক নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর ও টিকা বিতরণ কমিটির সদস্য অধ্যাপক শামসুল হক। প্রাথমিকভাবে যেসব কেন্দ্রে ফাইজারের টিকা দেয়া হবে সেগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল।

শামসুল হক বলেন, টিকার দেয়ার পর এক সপ্তাহ টিকা গ্রহীতাদের ওপর টিকার প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর মূল্যায়নের প্রেক্ষিতে সেকেন্ড-রান বা গণটিকা প্রদান শুরু হবে। সেকেন্ড-রান যখন শুরু হবে তখন হাসপাতালের সংখ্যা বাড়ানো হবে। যিনি প্রথম ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা পাবেন তাকে দ্বিতীয় ডোজ হিসেবেও সেটাই দেয়া হবে।

তিনি আরও, ইতোমধ্যে কোভ্যাক্স থেকে এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা আমাদের হাতে এসেছে। আমরা এটিকে সংরক্ষণ করেছি। টিকা দেয়ার জন্য গাইড লাইন এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আমরা আশা করি সোমবার থেকে ফাইজার টিকা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি।

১৮ বছরের ওপরের সবাইকে পর্যায়ক্রমে করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় নিয়ে আসার উদ্দেশ্য সামনে রেখে সরকার গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে গণ টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে। কিন্তু টিকার স্বল্পতার কারণে ২৬ এপ্রিল সরকার প্রথম ডোজ টিকাদান বন্ধের ঘোষণা দেয়। এর সপ্তাহখানেক পর একই কারণে সারাদেশের সবগুলো কেন্দ্রে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সরবরাহে ব্যর্থ হলে, বালাদেশের টিকাদান কর্মসূচিতে প্রভাব পড়ে। চুক্তি অনুযায়ী, সেরাম থেকে ছয় মাসের মধ্যে বাংলাদেশের তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল।

জানুয়ারিতে সেরাম প্রথম দফায় ৫০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করে। যার মধ্যে ওই মাসে মাত্র ২০ লাখ ডোজের একটি চালান ঢাকায় পৌঁছায়। এরপর সেরাম থেকে বাংলাদেশে টিকার আর কোনো চালান আসেনি। উপায় না পেয়ে সরকার অন্য দেশ থেকে টিকা কেনার চিন্তাভাবনা করেন।

গত ১২ মে উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে পাঁচ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা দেয় চীন। এরপর উপহারের এই টিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের দেয়া শুরু করা হয়। এরপর গত ১৩ জুন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর দুটি উড়োজাহাজ চীন থেকে আরো ছয় লাখ ডোজ সিনোফার্মার টিকা দেশে আনে। শনিবার থেকে এই টিকাও দেয়া শুরু হয়।

এছাড়া গত ৩১ মে বাংলাদেশে এক লাখ ছয় হাজার ডোজ ফাইজারের টিকা পৌঁছায়। ঢাকার বাইরে এই টিকা নেয়ার সুবিধা পাওয়া সম্ভব না হওয়ায় ঢাকার তিনটি টিকাকেন্দ্রে এগুলো ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। আজ থেকে টিকাগুলোর প্রয়োগ শুরু হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *