বাংলাদেশ-জাপান ৮ চুক্তি সই

বাংলাদেশ-জাপান ৮ চুক্তি সই

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টোকিও সফরে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে আটটি চুক্তি ও স্মারক সই হয়েছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে বর্তমানে টোকিও সফরে আছেন শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর স্মারকগুলো সই হয়।

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমিতে এই সফরটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। উভয় দেশ সংকট কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা করবে।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের দুই পক্ষ কৃষি, শুল্ক সংক্রান্ত, প্রতিরক্ষা, তথ্য-প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা, শিল্পোন্নোয়ন, মেধা সম্পদ, জাহাজ রিসাইক্লিং এবং মেট্রোরেল বিষয়ে যেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, ভবিষ্যত সহযোগিতার ক্ষেত্রে তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে।”

তিনি বলেন, “জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিসিদা এবং আমি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আদ্যপান্ত আলোচনা করেছি। আমরা খুব খুশি যে, আমরা বাংলাদেশ-জাপান বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পকর্কে ‘ব্যাপক অংশীদারিত্ব’ থেকে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ পৌঁছাতে পেরেছি।”

৮ চুক্তি ও স্মারক

মেমোরান্ডাম অব ডিফেন্স কো-অপারেশন: এটির উদ্দেশ্য হলো দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সংলাপ জোরদার। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে কর্মকর্তাদের সফর, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, সেমিনার আয়োজন, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং অন্যান্য যেকোন বিষয় যাতে দুইপক্ষ সম্মত হয়েছে।

এগ্রিমেন্ট অন মিউচুয়াল এসিস্ট্যান্স ইন কাস্টমস ম্যাটার: দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। সেগুলো দূর করা এবং বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য এই চুক্তি।

মেমোরান্ডাম অব কোঅপারেশন অন ইন্ডাস্ট্রিয়াল আপগ্রেডিং পার্টনারশিপ: ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টোকিও সফরের পরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানের সহযোগিতায় শিল্প নগরী তৈরি হয়েছে। সেটিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য এই স্মারক সই করা হয়েছে।

মেমোরান্ডাম অব কোঅপারেশন অন শিপ রিসাইক্লিং: এটি একটি বড় ব্যবসায়িক খাত। বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ শিপ রিসাইক্লিং দেশ। পরিবেশ দূষণ রোধ করে ভালোভাবে এই শিল্পের বিকাশ করার জন্য এই স্মারক।

মেমোরান্ডাম অফ কো-অপারেশন অন পেটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্ক: একটি দায়িত্বশীল উৎপাদনশীল দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে তৈরি করার জন্য সহায়তা দেওয়া হবে।

এছাড়া অন্য স্মারকগুলো হচ্ছে মেমোরান্ডাম অব কোঅপারেশন অন আইসিটি এবং সাইবার সিকিউরিটি, মেমোরান্ডাম অব কো-অপারেশন অন মেট্রোরেল এবং কৃষিখাতে সহযোগিতার জন্য মেমোরান্ডাম।

এর আগে শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে জাপানি প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সেখানে তাকে স্বাগত জানান এবং তাকে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা দেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সেখানে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রবেশপথে গার্ড অব অনারও পরিদর্শন করেন। এ সময় দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে টোকিওর হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান শেখ হাসিনা। তাকে স্বাগত জানাতে জাপান লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং স্ট্যাটিক গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর আগে ২০১৯ সালে শেষবার জাপান সফর করেছিলেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *