পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ভারতের রাজস্থান রাজ্যের উদয়পুরে দরজিকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন আজমির শরিফের প্রধান দেওয়ান জয়নুল আবেদীন আলী খান। তিনি বলেছেন, দেশে ‘তালেবানি মানসকিতা’ মাথাচাড়া দিলে তা কখনো বরদাশত করা হবে না। তিনি আরও বলেছেন, কোনো ধর্মই মানবতার বিরুদ্ধে সহিংসতা সমর্থন করে না।
মঙ্গলবার উদয়পুরে জনাকীর্ণ বাজারের ভেতর কানহাইয়া লালকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন হামলাকারীরা। পুলিশ বলছে, হামলাকারীরা ওই দরজির শিরশ্ছেদ করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি।
ভারতীয় পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে সাময়িক বরখাস্ত বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে সমর্থন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছিলেন দরজি কানহাইয়া লাল। এরপর থেকে হুমকি পাচ্ছিলেন তিনি।
কানহাইয়া লালকে হত্যার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন আজমির শরিফের প্রধান জয়নুল আবেদীন আলী খান। তিনি বলেন, ‘মানবতার বিরুদ্ধে সহিংসতা কোনো ধর্মই সমর্থন করে না, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মে। ইসলামে যা শিক্ষা দেওয়া হয়, তা শান্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। ইন্টারনেটে একটি রোমহর্ষক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, নিরীহ এক ব্যক্তির ওপর পাশবিক হামলা চালাচ্ছেন নীতিবিবর্জিত কিছু মানুষ। ইসলামে একে শাস্তিযোগ্য পাপ মনে করা হয়।’
জয়নুল আবেদীন খান আরও বলেছেন, ‘অভিযুক্ত হামলাকারীরা এমন কোনো চরমপন্থী গোষ্ঠীর অংশ, যারা সহিংসতাকেই সমাধানের একমাত্র পথ মনে করেন।’
জয়নুল আবেদীন খান বলেছেন, ‘আমি কঠোরভাবে এসব কাজে নিরুৎসাহিত করছি এবং তাদের (অভিযুক্তদের) বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ভারতের মুসলিমরা কখনো আমাদের মাতৃভূমিতে তালেবানি মানসকিতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেবে না।’
প্রকাশ্যে দরজি কানহাইয়া লালকে হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন জামিয়াত উলেমা-ই-হিন্দ নামে একটি সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা হাকিমউদ্দিন কাশমি।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, কোনোভাবেই তা মেনে নেওয়া যেতে পারে না। এটা আমাদের ধর্ম ও দেশের আইনের পরিপন্থী।’
মাওলানা হাকিমউদ্দিন কাশমি আরও বলেছেন, দেশে আইনের শাসন রয়েছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার এ দেশে কারও নেই।
দরজি কানহাইয়া লাল হত্যায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের নাম রিয়াজ আখতারি ও গাউস মোহাম্মদ।