পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চতর পড়ালেখার জন্য ভর্তি হওয়া বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের অনেকেই তাঁদের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারছেন না। কারণ এস্তোনিয়া, বেলজিয়াম, লাটভিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ ঢাকায় ভিসা কনস্যুলার পরিষেবা দেয় না। এসব শিক্ষার্থীকে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য ভারতের নয়াদিল্লি যেতে হবে। কিন্তু কভিড মহামারির কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নিয়মিত ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকায় তাঁরা যেতে পারছেন না। দুই দেশের মধ্যে প্রস্তাবিত ‘এয়ার বাবল’ ব্যবস্থাও এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে তাঁর বাংলাদেশ সফরের সময় শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও চিকিৎসাসেবা প্রার্থীদের ভারতে যাওয়ার জন্য দুই প্রতিবেশীর মধ্যে একটি ‘এয়ার বাবল’ চালুর প্রস্তাব করেছিলেন। সরকার ওই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে এখনো ‘এয়ার বাবল’ চালুর বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পারেনি।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সভাপতিত্বে দুই দেশের মধ্যে ষষ্ঠ যৌথ পরামর্শক কমিটির (জেসিসি) বৈঠক ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই বৈঠকে ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য অশুল্ক বাধা, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির দ্রুত সমাধানের পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের সন্ধানসহ বেশ কয়েকটি অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তবে দুই দেশের মধ্যে ‘এয়ার বাবল’ চালুর বিষয়ে সামান্য অগ্রগতি হয়েছিল; যদিও উভয় দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহন ও স্থল যোগাযোগের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু উচ্চশিক্ষা, চিকিৎসা বা ব্যাবসায়িক কারণে যাঁরা ভারত ও বাংলাদেশে যাতায়াত করতে চান, তাঁরা এখনো সেটি করতে পারছেন না।
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারের টুইটার পাতায় বিদেশে পড়াশোনা করার ভিসা আবেদন করতে ভারত ভ্রমণের ভিসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, ভারত এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, মালদ্বীপ, কানাডা, জার্মানিসহ ১৫টিরও বেশি দেশের সঙ্গে ‘এয়ার বাবল’ কার্যকর করেছে। এমনকি জাপান, যারা আন্তর্জাতিকভাবে এজাতীয় দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত, তারাও ভারতের সঙ্গে ‘এয়ার বাবল’ কার্যকর করেছে। উড্ডয়নের আগে এবং অবতরণের পরে কঠোর পরীক্ষার কারণেই অনেক দেশ এজাতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক বলেন, সম্ভবত এটি বোঝার সময় এসেছে যে আকাশপথে ভ্রমণের ব্যবস্থা উভয় দেশের জন্যই উপকারী। বাংলাদেশের নাগরিকরা, বিশেষ করে অল্প বয়সী শিক্ষার্থীরা যাঁরা ভারতে পড়াশোনা করে নিজেদের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরির চেষ্টা করছেন বা যাঁরা বিশেষ চিকিৎসা নিতে চান, তাঁদের এমন জরুরি পরিস্থিতিতে যাওয়ার সুযোগ থাকা উচিত।