পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সংঘর্ষে ৪০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং।
সোমবার (২৯ মে) উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেখানে যাবেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং জানিয়েছেন, মাঝে কিছুদিন শান্ত থাকার পর নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে মণিপুরে। অন্তত ৪০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদীর মৃত্যু হয়েছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে তাদের। জাতিগত সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালিয়েছিল সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী। তাদের সঙ্গে কুকি জনজাতির বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লড়াই হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে একে-৪৭, একে-৫৬ এর মতো আধুনিক অস্ত্র ছিল। এই লড়াইয়েই অন্তত ৪০ জন কুকি সন্ত্রাসবাদীর মৃত্যু হয়েছে। বেশ কিছু সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে মুখ্যমন্ত্রী গোষ্ঠী সংঘর্ষের কথা অস্বীকার করলেও শনিবার ও রবিবারে রাজ্যটির রাজধানী ইম্ফল-সহ একাধিক এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রবিবার ইম্ফলের কাছে দুই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে স্থানীয় সংবাদপত্রের খবরে জানানো হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ১২ জন।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার মনিপুরে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জনজাতিগুলোর মধ্যে কীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়, সেই লক্ষ্যেই তিনি এই সফর করবেন। মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে অমিত শাহের বৈঠক হওয়ার কথা। তিনি তিনদিন মণিপুরে থাকবেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সংঘাত চরমে রূপ নিয়েছে মণিপুরে। সংখ্যাগুরু মেইতেই গোষ্ঠীর সঙ্গে সেখানে বিরোধ শুরু হয় জনজাতি গোষ্ঠী কুকিদের। মেইতেইরা রাজ্যে জনজাতির সংরক্ষণ চায়। কুকিরা তার বিরোধিতা করছে। মেইতেইদের স্বপক্ষে সম্প্রতি মণিপুর হাইকোর্ট একটি রায় দেয়। এরপর মেইতেইরা একটি মিছিলের আয়োজন করেন। সেই মিছিল ঘিরেই প্রথম উত্তেজনা শুরু হয়।
সরকারি হিসেবে ওই সংঘর্ষে ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে অন্যান্য সূত্র বলছে, মৃতের সংখ্যা ৭১ জন। অন্তত ৩৫ হাজার মানুষ পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, শরণার্থীদের ফেরানোর ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। কিন্তু শনিবার রাত থেকে নতুন করে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সেই প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।