পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আফগানিস্তানে মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে জাতিসংঘে সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে তালেবান। তাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে আফগানিস্তানের নারী ও মেয়েদের মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (২৯ এপ্রিল) নারীদের প্রতি তালেবানের আচরণ নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে এই অভিযোগ আনা হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, বৈশ্বিক কোনও স্বীকৃতি না থাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের এই বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন না আফগানিস্তানের বর্তমান শাসক। তবে পূর্ববর্তী মার্কিন-সমর্থিত সরকারের নিযুক্ত একজন রাষ্ট্রদূত তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে জানানো হয়েছে। ওই সরকারকে ২০২১ সালে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল তালেবান।
বৈঠক পর্যালোচনার আগে জাতিসংঘের একটি নথির কিছু প্রশ্নের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি জানতে চায়, জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষ কীভাবে অপরাধীদেরকে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্যাতনের জন্য দায়ী করবে। ‘বিশেষ করে সেসব নারী এবং মেয়েরা যারা পরিকল্পিতভাবে মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে?’
এসময় তালেবান শাসনের পর থেকে ‘হুমকি ও অপব্যবহারের বৃদ্ধি’র কথা উল্লেখ করে আফগানিস্তানে এলজিবিটিকিউ বা সমকামী ব্যক্তিদের অধিকার প্রচারের বিষয়েও আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বৈঠকে নারীদের প্রতি তালেবানদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ব্রিটেন ও বেলজিয়ামও। এই বৈঠকে বিশ্বের মোট ৭৬টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান সরকার দাবি করেছে, তারা ইসলামিক আইনের ব্যাখ্যা অনুসারে নারী ও মেয়েদের অধিকারকে সম্মান করে থাকে।
তালেবান পুনরায় আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসায় দেশটির অধিকাংশ মেয়েকে মাধ্যমিক এবং নারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি অধিকাংশ আফগান নারী কর্মীকে সাহায্য সংস্থাগুলোতে কাজ করা থেকেও বিরত রেখেছে তালেবান। দেশটিতে তারা পার্লার বন্ধ করে দিয়েছে। নিষিদ্ধ করেছে নারীদের পার্কে যাওয়া। এমনকি পুরুষ অভিভাবকের অনুপস্থিতিতে নারীদের ভ্রমণও সীমিত করেছে তারা।
জাতিসংঘের নীতির আওতায়, জেনেভা-ভিত্তিক মানবাধিকার কাউন্সিলের সভায় কোনও রাষ্ট্রের মানবাধিকার রেকর্ডগুলো পর্যালোচনা করা যায়। পর্যালোচনা শেষে এ বিষয়ে একাধিক সুপারিশ করা হয়ে থাকে।
মানবাধিকার রেকর্ড পর্যালোচনার এই বিষয়টি বাধ্যতামূলক না হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রের নীতিগুলো যাচাই-বাছা, এমনকি প্রয়োজনে তা সংস্কারের চাপও দিতে পারে জাতিসংঘে মানবাধিকার কাউন্সিল।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষায় পরিকল্পিত একটি আন্তঃসরকারি বৈশ্বিক সংস্থা জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল। এটি এমন তদন্তেরও নির্দেশ দিতে পারে যার প্রমাণ কখনও কখনও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আদালতে ব্যবহৃত হয়।