যৌথ বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত

যৌথ বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বান্দরবানের রুমায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তিন সদস‌্য নিহত হয়েছে। এ সময় তা‌দের আস্তানা থেকে তিন‌টি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, পোশাক ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (১৯ মে) দুপু‌রে রুমা-রোয়াংছড়ি সীমান্তবর্তী ডেবাছড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো- ফিয়াংপিদোং পাড়ার জ্ঞানমুন বমের ছে‌লে এডি থাং বম (২৪), সিকুয়াল বমের ছে‌লে রুমালসাং নয়াম বম (২৩) এবং জিরথন বমের ছে‌লে রুয়াল মিনলিয়ান বম।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, জেলার রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী ডেবাছড়া এলাকায় কেএনএফের আস্তানায় অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। সে সময় কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়। থেমে থেমে কয়েক দফায় গোলাগুলির ঘটনায় কেএনএফের তিন সশস্ত্র সদস্য নিহত হয়। তাদের মধ্যে দুজন ঘটনাস্থলে এবং একজন আহত হওয়ার কিছু সময় পর মারা যায়।

জানা গেছে, ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ যৌথ বাহিনীর সদস্যরা রুমা সদরে নিয়ে আসবেন। গোলাগুলিতে তিন জন নিহত হওয়ার পর কেএনএফের সশস্ত্র অন্য সদস্যরা আস্তানা ছেড়ে পাহাড়ের গহিন অরণ্যে পালিয়ে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যৌথ বাহিনীর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে স্থানীয় সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। কৌশলে অভিযানের জাল বিছিয়ে কেএনএফের অস্ত্রধারীদের রুমা-রোয়াংছড়ি সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে ঘিরে ফেলা হয়েছে। রনিনপাড়া থেকে আট কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের খাদে ডেবাছড়া ঝিরি এলাকার খাদে তিন কেএনএফ সদস্য নিহত হয়েছে।’

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতিকুর রহমান জানান, রোয়াংছড়ি-রুমার সীমান্তবর্তী ডেবাছড়া ঝিরিতে যৌথ অভিযানে কেএনএফের তিন সদস্য নিহত হয়েছে। অভিযানে রুমা সেনা জোনের সদস্যরা অংশ নিয়েছেন। অভিযান থেকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ফিরলে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।

গোলাগুলির বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, ‘রুমা-রোয়াংছড়ি সীমান্তবর্তী এলাকায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলির খবর পেয়েছি। গুলিতে কয়েকজন হতাহতের কথা শোনা গেলেও এখন পর্যন্ত কোনও মরদেহ পুলিশ পায়নি। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের টিম ফিরলে বিস্তারিত জানানো যাবে।’

প্রসঙ্গত, গত ৭ মে রুমা উপজেলার দুর্গম দার্জিলিং পাড়ায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে কেএনএফের এক সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত হয়। এর়আগে গত ২৮ এপ্রিল রুমা উপজেলার রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের জঙ্গলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কেএনএফের গোলাগুলিতে দুজন সশস্ত্র সন্ত্রাসীর মৃত্যু হয়েছিল। ২২ এপ্রিল রুমা উপজেলার দুর্গম মুনলাই পাড়ায় সেনাবাহিনী সঙ্গে গোলাগুলিতে কেএনএফের এক সশস্ত্র সদস্যের মৃত্যু হয়। সে সময় ঘটনাস্থল থেকে কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণে অস্ত্র-গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

এদিকে, গত ২ ও ৩ মে রুমা-থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, হামলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট, ব্যাংকের অর্থ ও ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত নয়টি মামলা হয়েছে। তার মধ্যে থানচিতে চারটি ও রুমায় পাঁচটি মামলায় ৮৬ জনকে কেএনএফের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে আদালতের নির্দেশে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৫ জন নারী রয়েছেন।

Related Articles