অসহনীয় হয়ে পড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের বাজার

অসহনীয় হয়ে পড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের বাজার

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : কয়েক মাস ধরে স্থিতিশীল থাকার পর আবারও অসহনীয় হয়ে পড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে দাম বেড়েছে এসব পণ্যের। এছাড়া আবারও দাম বেড়েছে আলুর, এতে অস্বস্তি রয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, দুদিন আগেও যে আলু ৫০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছিল তা এখন বেড়ে (আকারভেদে) ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিনে রাজধানীর শান্তিনগর, মগবাজার ও কাওরান বাজারে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে লাল ও সাদা ডিমের মূল্য। বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা এবং সাদা ডিম ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ডজনে ২০ টাকা বেড়ে হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা।

ডিমের পাশাপাশি বাড়তে শুরু করেছে মুরগির দাম। কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি বিক্রির দাম। গত সপ্তাহেও ১৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া এসব মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে। ব্রয়লার মুরগির মতোই দাম বেড়েছে সোনালি মুরগির। কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকায়।

এসবের মধ্যে স্থিতিশীল রয়েছে সবজির বাজার। বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা ও আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভারত রপ্তানি বন্ধের পর পেঁয়াজের বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। রাতারাতি ২০০ টাকা কেজি ছাড়িয়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম এখন নিম্নমুখী। তবে এখনো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে আদা-রসুন। দেশি রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা, যা সপ্তাহ খানেক আগে ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা। চায়না রসুনের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায়। এ মানের রসুনের কেজিতে সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে।

ফুলকপি ও বাঁধাকপির আকার ভেদে দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে। প্রতি পিস লাউয়ের দাম ৭০-৮০ টাকা। শিম জাত ভেদে প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বেগুন ৭০- ৮০ টাকা, মুলা ও বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে মান ভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। কাঁকরোলের কেজি ৭০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা, শসা, ঝিঙে, ঢ্যাঁড়স ও পটোলের কেজি ৭০ থেকে ৯০ টাকা। কাঁচা মরিচ ১৪০- ১৬০ টাকা কেজি। গাজর ৮০-১০০ টাকা কেজি, কাঁচা কলার হালি ৪০-৫০ টাকা, লেবুর হালি ৩০-৪০ টাকা।

তবে এসবের মধ্যে বেড়েছে আলুর দাম। সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে আলু। খুচরা বাজারে পুরোনো আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। যদিও সরকারের নির্ধারিত দর ৩৫ টাকা। এছাড়া আকারভেদে প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়।

ডিম ও মুরগি বিক্রেতারা জানান, শীতের সময় বিয়ে ও পিকনিকের মতো আয়োজন অনেক বেশি থাকে। তাতে ডিম-মুরগির চাহিদা বাড়ে। ফলে দামও বেড়ে যায়। গত সপ্তাহ থেকে পাইকারি বাজারে ডিমের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। তবে সরবরাহ এখনো ভালো রয়েছে। শীতকালে সাধারণত নানা ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান বেশি থাকে। আবার শীতের প্রকোপ বেড়ে গেলে মুরগির নানা রোগবালাই দেখা দেয়। তাতে মাংস ও ডিমের উৎপাদনে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সেই তুলনায় চাহিদা থাকে বেশি। ফলে দামে প্রভাব পড়ে।

খুচরা সবজি বিক্রেতারা জানান, দাম কমা বা বেশির সঙ্গে আমাদের হাত নেই। আমরা যে দামে ক্রয় করি তার থেকে কিছু বেশি দামে বিক্রি করে। কিছু লাভ না করলে আমরা চলবো কীভাবে। তবে বাজারে যোগান কম থাকায় দাম বেশি।

সূত্র: ইত্তেফাক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *