অস্থির চালের বাজার

অস্থির চালের বাজার

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বেশ কিছু দিন ধরে বাড়তি দামে বিক্রি হয়েছে পেঁয়াজ। প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা পর্যন্ত। চলতি সপ্তাহে এই পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। আলুর দামও কিছুটা কমেছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া আলু ৫ থেকে ১০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। সেই সাথে সব ধরনের মুরগির দামও কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ১৮০ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি ১০ থেকে ২০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। অন্য দিকে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে চালের বাজারে। প্রতি কেজি চালে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সবজির বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির কেজিতে অন্তত ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। মানভেদে বেগুন প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিচিঙ্গা ও পটোল কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, ধুন্দল কেজি ৬০ টাকায়, পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়, করলা ৮০ টাকায়, টমেটো ১৬০ টাকায়, লাউ প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, চালকুমড়া প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০, কাঁকরোল ৬০, শসা ৪০, বরবটি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে রসুন। দেশী রসুন কেজি ২২০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ছোট দানার মসুর ডাল ১৪০ টাকায় এবং বড় দানার মসুর ডাল ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন আর নামে-বেনামে চাঁদা দিতে হচ্ছে না। ফলে সব ধরনের সবজির দাম কমতির দিকে। কয়েক দিন থেকে শিক্ষার্থীরা বাজারে আসছেন। তাদের সক্রিয় ভূমিকা থাকায় এখন আর কোনো পয়েন্টে চাঁদা দিতে হচ্ছে না। ফলে সব ধরনের সবজির কেজিতে অন্তত ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে। অর্থাৎ আগে এই অতিরিক্ত অর্থ চাঁদার জন্য বাড়তি দিতে হতো।

এ দিকে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও অস্থির চালের বাজার। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে অনেকটাই নীরবে বাড়ছে চালের দাম। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও কারফিউ ঘিরে সারা দেশে পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হয়ে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের মতো উচ্চমূল্যে বিক্রি হওয়া চালের দামও নতুন করে বেড়ে যায়। খুচরায় বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) সব ধরনের চালের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা এবং প্রতি কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি চিকন চাল (মিনিকেট) মানভেদে ৭২ থেকে ৭৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ব্রি-২৮ ও পাইজাম চাল প্রতি কেজি ৫৮ থেকে ৬২ টাকায় এবং নাজিরশাইল চাল প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদর তথ্যেও চড়া দামে চাল বিক্রির বিষয়টি দেখা গেছে। টিসিবির বাজারদর প্রতিবেদনে দেখা যায়, সরু বা চিকন চাল মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭৮ টাকা। পাইজাম চাল কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় উঠেছিল, সেটি এখন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় নেমেছে। সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায় উঠেছিল, সেটি এখন ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিমের ডজন ১৭০ টাকায় উঠেছিল, এখন সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় ১৫৫ টাকায় নেমেছে। তবে কোনো কোনো দোকানে ডজন ১৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, এক কেজি ২০০ গ্রাম ইলিশের দাম ১৬০০ ও এক কেজির নিচে ১৪০০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি পাঙ্গাশ মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, রুই-কাতল প্রতি কেজি আকার ভেদে ৩০০-৪০০, শিং প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টেংরা প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, কই প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা ও বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Related Articles