অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলতে শুরু করেছে, ৬ ফুট বাড়তে পারে সমুদ্রের পানি

অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলতে শুরু করেছে, ৬ ফুট বাড়তে পারে সমুদ্রের পানি

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা এখন বিশ্বজুড়ে প্রধান মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাজার বছর ধরে পৃথিবীর তাপমাত্রা ০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে স্থির ছিল। তবে শিল্পায়ন ও বনায়ন ধ্বংসের কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, আগামী কয়েক দশকের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা ২ থেকে ৫ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে পারে। এর প্রভাব উন্নয়নশীল দেশে বেশি পড়বে, যাদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করার মতো অর্থায়ন নেই।

যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার বরফের যে বিপুল পরিমাণ চাঁই ছিল তা ক্রমশ গলতে শুরু করেছে। এই শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত গলতে থাকবে ওই বরফের স্তুপ। এর ফলে সমুদ্রে পানির উচ্চতা আরও বাড়বে।

যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীদের একটি দল দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার বরফের চাঁই নিয়ে কাজ করছেন। সম্প্রতি তারা গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সমুদ্র গবেষক কেইটলিন নটেন গবেষণাপত্রে লিখেছেন, “আমাদের গবেষণা একটি প্রশ্নকে সামনে রেখে এগিয়েছে। বরফ গলাকে কি কোনোভাবে আটকানো যায়? আদৌ কি তা সম্ভব?”

তিনি জানিয়েছেন, তাদের গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তা খুব সুখকর নয়। পৃথিবীর সার্বিক তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই যতটা বেড়েছে, তাতে আর চেষ্টা করেও বরফের শেল্ফ গলা বন্ধ করা সম্ভব নয়।

গবেষণায় বলা হয়েছে, পুরো বরফ গলতে হয়তো একটা পুরো শতাব্দী লেগে যাবে, এর ফলে সমুদ্রে পানির স্তর অন্তত ৬ ফুট বেড়ে যাবে। তবে আগামী কয়েক দশকে বরফ গলার পরিমাণ ক্রমশ বাড়বে। সমুদ্রপৃষ্ঠ ক্রমশ ফুলতে শুরু করবে। যার ফলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই সভ্যতা সংকটের মুখে পড়বে।

যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীদের এই দলটি প্রথম অত্যাধুনিক কম্পিউটারের সাহায্যে সাম্প্রতিক পরীক্ষাটি করেছে। তারা বরফের চাদরের নিচে গিয়ে সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা পরীক্ষা করেছে। সমুদ্রের পানি থেকে কত পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসৃত হচ্ছে, তা-ও পরীক্ষা করে দেখেছেন তারা।

তারা জানিয়েছেন, সার্বিকভাবে তাপমাত্রা বাড়ছে। যদি তার গতি কমানোও সম্ভব হয়, পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি কমানো সম্ভব হবে না। ফলে গলতে গলতে বরফের চাদরটি এক সময় ভেঙে পড়বে। আর তখনই ভয়াবহ এক সমস্যার মুখে পড়বে সভ্যতা।

২০০৯ সালে বিজ্ঞানীরা প্রথম জানিয়েছিলেন, পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার বরফের চাদর ক্রমশ গলতে শুরু করেছে। তবে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা যে গবেষণা করেছেন, এত আধুনিক যন্ত্র এর আগে ওই অঞ্চলে ব্যবহৃত হয়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *