আওয়ামী লীগ শুধু দেশের উন্নয়ন চায় : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ শুধু দেশের উন্নয়ন চায় : প্রধানমন্ত্রী

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ শুধু দেশের উন্নয়ন চায়। বাংলাদেশ এখন যেকোনো দেশের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এখন আমাদেরকে আর কেউই পেছনে টেনে নিতে পারবে না।”

ইতালি সফরের প্রথম দিন মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে রোমের পার্কে দ্যা প্রিনসিপি গ্রান্ড হোটেল অ্যান্ড স্পা’তে আওয়ামী লীগের ইতালি শাখা আয়েজিত এক সংবর্ধনায় প্রদত্ত ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান, এইচএম এরশাদ ও খালেদা জিয়া বাংলাদেশের উন্নয়নের ব্যাপারে আন্তরিক ছিলেন না। কারণ তাদের কারও জন্মই এ দেশের মাটিতে হয়নি। একমাত্র আমার বাবা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) এবং আমি এ মাটির সন্তান। আমরা ছাড়া এখন পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁরা বাংলাদেশের বাইরে থেকে এসেছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বিহারে, এরশাদ কুচবিহারে ও খালেদা জিয়া শিলিগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। আপনারা যদি খেয়াল করে দেখেন, তা হলে দেখতে পাবেন আমি এবং বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কেউই বাংলাদেশের মাটির সন্তান নয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি, বাংলাদেশের সন্তান হিসেবে, এ মাটির প্রতি আমার কিছু কর্তব্যবোধ রয়েছে। দেশের উন্নয়নের জন্য দেশকে ভালোভাবে জানা অপরিহার্য। সঠিক পরিকল্পনা ও সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা একটি দেশকে অবশ্যই বদলে দিতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘অনেকেই ক্ষমতায় এসেছেন। তবে, তারা দেশকে ভালোভাবে জানতেন না কেননা তাদের এ মাটিতে জন্মই হয়নি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি আরো বলেন, ‘৭৫-এর জাতির পিতাকে হত্যার পর যারাই ক্ষমতায় এসেছিল তারা নিজেদের ভাগ্য বদলে ব্যস্ত ছিল, জনগণের জন্য কিছু করে নাই। সে সময় বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচিতি ছিল সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস এবং দুর্ভিক্ষের দেশ হিসেবে এবং বিশ্বে বাংলাদেশকে অবহেলার চোখে দেখতো, যা আমাদের জন্য লজ্জার এবং বেদনাদায়ক ছিল। ক্ষমতাকে আমরা জনগণের জন্য কাজ করার সুযোগ বলে মনে করি। এটি জনগণের সেবা করার সুযোগ। আর আমি জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আর এটাই আমাদের লক্ষ্য।’

বাংলাদেশের সব উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ শতাংশ এখন নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পের শতকরা ৯০ ভাগ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছি। এখন আর দাতারা আমাদের ভিক্ষা দিতে আসে না। বরং তারা আমাদেরকে তাদের উন্নয়ন সহযোগী অভিহিত করে সহযোগিতা দিতে আসে। কারণ কারো কাছে আমরা ভিক্ষা চাই না।’ নিজস্ব অর্থায়নে সরকারের পদ্মাসেতু নির্মাণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো কাজ যে আমরাই পারি তা আমরা প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছি।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশি প্রবাসীদের সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়ম-নীতি মেনে চলার আহ্বান জানান। যাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের প্রতিটি উপজেলা থেকে কমপক্ষে এক হাজার জনকে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার ডিজিটাল পাসপোর্টের পরবর্তীতে আধুনিক ই-পাসপোর্ট চালু করেছে।

বাংলাদেশের বিমানবন্দরে অনেক সময় প্রবাসীদের হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে আমাদের দেশের কিছু মানুষের চরিত্রই খারাপ। যেই শুনে বাইরে থেকে আসবে, তখনই ভাবে যে একটু চাপ দিলেই মনে হয় কয়েকটা ডলার পাওয়া যাবে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন,‘ ঘুষ যে দেয়, সেও যেমন অপরাধী, যে নেয় সেও অপরাধী। উভয়ই সমান অপরাধী। দিয়ে দিয়েই আপনারা এ অভ্যাসটা খারাপ করেছেন। ভবিষ্যতে এ কাজটা আর করবেন না।’‌

এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘তার সরকার অতি দারিদ্রের হার শতকরা ১০ শতাংশে এবং দারিদ্রের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ইনশাল্লাহ আমরা এ বছরের মধ্যে এই হারকে আরো ২ থেকে ৩ ভাগ নামিয়ে আনতে সক্ষম হব,যেজন্য আমরা বেশকিছু বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই দেশে আর কেউ দরিদ্র থাকবে না এবং কেউ আমাদের সহানুভূতির চোখে দেখবে না। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে চলবো, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইদ্রিস ফরাজী এবং ইতালি প্রবাসী হোসনে আরা বেগম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *