আট উইকেটে বাংলাদেশের বড় জয়

আট উইকেটে বাংলাদেশের বড় জয়

স্পোর্টস ডেস্ক ● তামিম ইকবালের ৮৪ রান আর মুশফিকুর রহিমের ১৫ রানে অপরাজিত থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে বড় জয় এনে দিয়েছে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশই ছিল পরিস্কার ফেভারিট। সেই তকমার যথার্থতাও দারুণভাবে প্রমাণ করলেন মাশরাফি-সাকিব-তামিমরা। জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিয়ে শুভসূচনা করলেন ত্রিদেশীয় সিরিজের। সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স আর তামিমের দারুন ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ পেয়েছে ৮ উইকেটের দাপুটে জয়। ১৭১ রানের জয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পৌঁছে গেছে ২৮.৩ ওভার ব্যাটিং করেই।

দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন এনামুল হক বিজয়। শুরুটাও করেছিলেন দারুণভাবে। ঝড়ো ব্যাটিং করে সংগ্রহ করেছিলেন ১৯ রান। কিন্তু ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি ডানহাতি এই ওপেনার। সাজঘরে ফিরে গেছেন চতুর্থ ওভারে। তবে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটে ভর করে জয়ের পথে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুই ব্যাটসম্যান গড়েছিলেন ৭৮ রানের জুটি। ২০তম ওভারে সাকিব ৩৭ রান করে ফিরে গেলেও শেষপর্যন্ত উইকেটে থেকে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন তামিম। ৮৪ রানের দারুন ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন এই বাঁহাতি ওপেনার। ১৪ রানের ছোট্ট ইনিংস এসেছে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে।

ইমরুল কায়েস ইনজুরির কবলে পড়ায় প্রায় তিন বছর পর আবার জাতীয় দলে জায়গা পেয়েছিলেন এনামুল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওপেন করতে নেমেছিলেন তামিম ইকবালের সঙ্গে। চারটি চার মেরে শুরুটা ভালোভাবে করলেও খুব বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি এনামুল। ফিরে গেছেন ১৯ রান করে।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সিকান্দার রাজার ৫২, পিজে মুরের ৩৩, ব্রেন্ডন টেলরের ২৪ রানের ইনিংসগুলোতে ভর করে স্কোরবোর্ডে ১৭০ রান জমা করতে পেরেছে জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের পক্ষে দারুণ বোলিং করে তিনটি উইকেট নিয়েছেন সাকিব। দুটি করে উইকেট গেছে মুস্তাফিজুর রহমান ও সানজামুল ইসলামের ঝুলিতে।

শুরুতেই জোড়া আঘাত হেনে জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরেছিলেন সাকিব। পরে ১টি করে উইকেট নিয়ে তাদের ওপর চাপ বাড়িয়েছিলেন মাশরাফি-মোস্তাফিজ। শেষ পর্যন্ত সেই চাপ কাটিয়ে উঠতে পারল না অতিথিরা। ধারাবাহিকভাবে টাইগার বোলারদের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ৪৯ ওভারে ১৭০ রানে গুটিয়ে গেছে তারা।

সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই তিনি বল তুলে দেন দলের অন্যতম ভরসা সাকিব আল হাসানের হাতে। আস্থার প্রতিদানও দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। প্রথম ওভারেই সলোমন মির ও ক্রেইগ অরভিনকে ফিরিয়ে দেন তিনি। তারা কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি।

এরপর ব্রেন্ডন টেলরকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন হ্যামিলটন মাসাকাদজা। তবে তাকে বেশি দূর এগোতে দেননি মাশরাফি। দলীয় ৩০ রানে মুশফিকুর রহিমের তালুবন্দি করে অভিজ্ঞ এ ব্যাটসম্যানকে ফেরান তিনি।

মাসাকাদজা ফিরলেও থেকে যান টেলর। সিকান্দার রাজাকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা করেন তিনি। তবে সেই পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। দলীয় ৫১ রানে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে অভিজ্ঞ টেলরের (২৪) প্রতিরোধ ভাঙেন তিনি।

তার পর ক্রিজে আসেন ম্যালকম ওয়ালার। তাকে নিয়ে দলকে টেনে তুলতে লড়াইয়ের আভাস দেন রাজা। এ যাত্রায় তাদের লড়াই থামিয়ে দেন বিশেষজ্ঞ স্পিনার সানজামুল ইসলাম। দলীয় ৮১ রানে ওয়ালারকে (১৩) সাব্বিরের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তিনি।

একের পর এক ব্যাটসম্যানরা যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দিলেও একপ্রান্ত আগলে রাখেন রাজা। তার লড়াই চলতেই থাকে। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন পিটার মুর। এক পর্যায়ে থামে রাজার লড়াইও। দলীয় ১৩১ রানে সাকিব-মুশফিকের যৌথ প্রচেষ্টায় রানআউটে কাটা পড়েন তিনি। ফেরার অগে ৯৯ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ৫২ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন নির্ভরযোগ্য এ ব্যাটসম্যান।

রাজা ফিরে গেলে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। দলীয় ১৬১ রানে গ্রায়েম ক্রেমারকে ফেরান তিনি। এটি তার তৃতীয় শিকার।

পরে জোড়া আঘাতে সফরকারীদের ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেন রুবেল হোসেন। ৪৮ ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলেন মুর ও ছাতারার উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান এ রিভার্সসুইং তারকা। তবে তা আলোর মুখ দেখেনি।

অতিথি শিবিরে শেষ পেরেক ঠুকেন মোস্তাফিজ। মুজারাবানিকে বোল্ড করে ফেরালে ১৭০ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন সাকিব। ২টি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজ ও রুবেল। ১টি করে উইকেট ঝুলিতে ভরেন মাশরাফি ও সানজামুল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *