আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি রাখতে পারে বাংলাদেশ

আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি রাখতে পারে বাংলাদেশ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : মূল্য নির্ধারণের উদ্বেগ একপাশে সরিয়ে সরবরাহ উদ্বেগ এবং আইনি চ্যালেঞ্জের কারণে ভারতের আদানি পাওয়ারের সাথে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি বহাল রাখতে পারে বাংলাদেশ। বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন সরকার তার পূর্বসূরির চুক্তিগুলো বিশেষ করে বিশেষ আইনের অধীনে করা অস্বচ্ছ, ত্রুটিযুক্ত প্রকল্পগুলো পর্যাপ্তভাবে জাতির স্বার্থ রক্ষা করেছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য একটি প্যানেল তৈরি করেছে। মূল্যের উদ্বেগের জন্য ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডে আদানির ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের জন্য বিদ্যুৎ কেনার চুক্তিটি পর্যালোচনা হচ্ছে।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি বাংলাদেশের বিদ্যুত চাহিদার প্রায় এক দশমাংশ পূরণ করে। তাই আদানির চুক্তিটি সরাসরি বাতিল করা কঠিন হবে। এছাড়া চুক্তিতে কোনো ধরনের জালিয়াতি করা হয়েছে কিনা সেই সম্পর্কে শক্তিশালী প্রমাণ ছাড়া আন্তর্জাতিক আদালতে আইনি চ্যালেঞ্জ ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দ্বিতীয় সূত্র জানিয়েছে, চুক্তি থেকে সরে আসা সম্ভব নাও হতে পারে। একমাত্র সম্ভাব্য বিকল্প হচ্ছে মূল্য কমানোর জন্য পারস্পরিক সমঝোতা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, কমিটি বর্তমানে বিষয়টি পর্যালোচনা করছে, তাই এই বিষয়ে মন্তব্য করা সময়োচিত হবে না।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা ২০২৩- ২৪ অর্থ বছরের সর্বশেষ অডিট রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য প্রায় ১২ টাকা করে নেয়। এটি ভারতের অন্যান্য বেসরকারি উত্পাদকদের হারের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি এবং ভারতীয় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কেন্দ্রগুলোর তুলনায় ৬৩ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ চুক্তিটি পর্যালোচনা করছে বলে আদানির কাছে ‘কোনো ইঙ্গিত’ নেই উল্লেখ করে ভারতের একজন মুখপাত্র বলেন, বকেয়া বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও আমরা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছি, যা উল্লেখযোগ্য উদ্বেগের বিষয় এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম অস্থিতিশীল করে তুলছে।

আদানি পাওয়ার বকেয়া বাবদ বাংলাদেশের কাছ থেকে প্রায় ৮০ কোটি ডলার পাবে। এই অর্থ পরিশোধের চেষ্টা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র বলেছেন, আমরা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং সরকারের ঊর্ধ্বতনদের সাথে ক্রমাগত সংলাপ চালাচ্ছি, যারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন শিগগিরই বকেয়া পরিশোধ করা হবে। তবে আদানির সরবরাহ করা বিদ্যুতের দাম কেন অন্যদের চেয়ে বেশি সে প্রশ্নের উত্তর দেননি মুখপাত্র।

Related Articles