আপাতত খুলছে না লেকহেড গ্রামার স্কুল

আপাতত খুলছে না লেকহেড গ্রামার স্কুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার লেকহেড গ্রামার স্কুল খুলে দিতে হাই কোর্টের দেয়া রায় স্থগিতের মেয়াদ আরও দশ দিন বাড়িয়ে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত। হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিয়ার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চ  রোববার এই আদেশ দেয়।

আদেশে বলা হয়, স্কুলটি খুলে দিতে হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তার কার্যকারিতা আরও দশ দিন স্থগিত থাকবে। এই সময়ের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেলকে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে হবে।

এছাড়া লেকহেড স্কুলের ব্যবস্থাপনা পর্ষদ বা কর্মীদের কেউ জঙ্গিবাদে জড়িত থাকলে তা তদন্ত করে ওই সময়ের মধ্যে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে শুনানির পরবর্তী দিন রাখা হয়েছে ৩০ নভেম্বর।

রোববার আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার আখতার ইমাম, সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার। তাদের সঙ্গে ছিলেন রাশনা ইমাম।

জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতা, ধর্মীয় উগ্রবাদে উৎসাহ দেওয়াসহ কয়েকটি অভিযোগে গত ৬ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকায় লেকহেড গ্রামার স্কুল বন্ধের নির্দেশ দেয়।

ঢাকা জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট ইলিয়াস মেহেদী পরদিন ওই স্কুলে গিয়ে সিলগালা করে দেন। সেদিন তিনি বলেন, স্কুলটি কোনো ধরনের কার্যক্রম চালালে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিবেচিত হবে। ওই স্কুলের মালিক খালেদ হাসান মতিন এবং ১২ শিক্ষার্থীর অভিভাবক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যায়। তাদের দুটি রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ৯ নভেম্বর রুল জারি করে।

লেকহেড গ্রামার স্কুলের গুলশান ও ধানমন্ডি শাখা বন্ধের আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, কেন স্কুলের মালিককে স্কুল খোলা ও পরিচালনা করতে দেওয়ার জন্য বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা ছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের সকল ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, ঢাকার জেলা প্রশাসক ও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়রম্যানকে এর জবাব দিতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার হাইকোর্টে রুলের ওপর শুনানি হয়। এরপর মঙ্গলবার রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্কুলটি খুলে দেওয়ার রায় দেয় হাই কোর্ট। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে গেলে গত বুধবার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাই কোর্টের রায় রোববার পর্যন্ত স্থগিত করে দেন এবং বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এর ধারাবাহিকতায় রোববার বিষয়টি আপিল বিভাগে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *