আমাদের ঘুম হারাম করে দেয় ‘বর্ষা‘

আমাদের ঘুম হারাম করে দেয় ‘বর্ষা‘

মাদারীপুর  প্রতিনিধি : মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চরজানাজাত এলাকায় নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ফলে বসতবাড়ি, সড়ক, হাট-বাজার, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর তীরবর্তী হওয়ায় প্রতি বছর উপজেলার চরজানাজাত এলাকাটি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। এতে এলাকার সাধারণ মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ে চরম দুর্ভোগে। আগেই এই এলাকার বেশ কয়েকটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পানি বৃদ্ধি ও প্রবল স্রোতে এ বছরও এই অঞ্চলের একমাত্র শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়টি বিলীন হওয়ার পথে। দু’একদিনের মধ্যে পুরো বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে চলে যাবে। বর্ষা মৌসুম এলে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনচিত্র পাল্টে যায়। দিনের বেশিরভাগ সময় নদী ভাঙনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়। এক সময়ের শতশত জমির মালিকরা আজ নিঃস্ব।

রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, চরজানাজাত ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, খাসেরহাট বাজারের প্রায় দুই শতাধিক দোকান-পাট, আট কি.মি. সড়ক, ৫০টির বেশি অর্ধপাকা বাড়ি ও দুই শতাধিক কাঁচা বাড়িঘর ভাঙনের মুখে রয়েছে।

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত রাশিদা বেগম বলেন, কোনো এক সময় আমার স্বামীর ৪০-৫০ বিঘা জমি ছিল। আজ আমাদের ১ বিঘা জমিও নাই। পদ্মা নদী আমাদের সব জমি কেড়ে নিয়েছে। এখন আমরা পরের জমিতে কোনোরকম ঘর তুলে থাকি।

চরজানাজাত ইউনিয়নের বাসিন্দা রফিক বেপারী বলেন, বর্ষা মৌসুম এলে আমাদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে যায়। সারাদিন দুশ্চিন্তায় থাকি, এই বুঝি নদী ভাঙনে আমাদের ভিটেমাটি নিয়ে গেলো।

চরজানাজাত ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান মাহামুদ জানান, খুবই কষ্টের সঙ্গে বলতে হয় চরজানাজাত ইলিয়াস আহম্মেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় পদ্মা নদীতে বিলীন হওয়ার অপেক্ষায় আছে। যেভাবে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে মনে হয় ২-১ দিনের মধ্যে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বিদ্যালয় নদী থেকে মাত্র ১০০ ফুট দূরে অবস্থান করছে। এ জন্য বিদ্যালয়ের ভবনটি সরানো হচ্ছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ বলেন, যেহেতু নদী ভাঙনে এই অঞ্চলের লোকজন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে লক্ষ্যে আমাদের প্রশাসনিকভাবে বিশেষ কিছু উদ্যোগ রয়েছে। পুরো বর্ষা মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থেকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *