আশঙ্কাই সত্যি হলো, মৃত্যু ৫০ হাজার ছাড়াল

আশঙ্কাই সত্যি হলো, মৃত্যু ৫০ হাজার ছাড়াল

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান আশঙ্কা করেছিলেন, ভূমিকম্পে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাবে। সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো। তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক এবং সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে আঘাত হানে ভয়াবহ ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭.৮।

দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে তুরস্কে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ২১৮-তে। সিরিয়ায় সর্বশেষ ঘোষিত মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৯১৫ জন। দুই দেশে সম্মিলিত মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজারের ওপরে উঠে গেল।

গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পের পর থেকে শতাধিক বার ‘আফটার শক’-এ কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক এবং সিরিয়া। দুই দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ। তুর্কি কর্তৃপক্ষ বলেছে, কমপক্ষে চার লাখ ১২ হাজার ইউনিট সংবলিত এক লাখ ১৮ হাজার ভবন ধসে পড়েছে কিংবা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে সেগুলো ভেঙে ফেলা ছাড়া উপায় নেই। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরো কত হাজার মানুষ চাপা পড়ে আছে তার কোনো হিসাব নেই। বিগত শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে দেড় কোটি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পের আজ ১৯তম দিন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জীবিতদের উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়ে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি)। এখন ধ্বংসস্তূপ সরালেই বেরিয়ে আসছে শত শত মরদেহ।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান ক্ষতিগ্রস্ত হাতায় প্রদেশ পরিদর্শনকালে বলেছেন, ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অঞ্চলে দুই লাখ বাড়ি নির্মাণ করা হবে। নতুন বাড়িগুলো ফন্ট লাইন থেকে দূরে পাহাড়ের কাছাকাছি তৈরি করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আশা করছেন, এক বছরের মধ্যেই ঘরহারা মানুষকে নতুন বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন।

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত দুই দেশে এখন শুধুই স্বজনহারাদের কান্নার রোল। যারা বেঁচে গেছেন, তাদের খাবার, পানি ও ওষুধ সরবরাহ করতে নাজেহাল অবস্থা আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংগঠনগুলোর। পর্যাপ্ত খাবার এবং পানি ছাড়াই রাস্তায় দিন কাটাচ্ছে গৃহহীন মানুষ। প্রবল শৈত্যপ্রবাহ, ঠাণ্ডা এবং তুষারপাতের মধ্যে উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

৬ ফেব্রুয়ারি প্রথমে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে। মাটির ১৭.৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল এর উৎসস্থল। কম্পন অনুভূত হয় লেবানন, সিরিয়া, সাইপ্রাস, গ্রিনল্যান্ডেও।

  • সূত্র : রয়টার্স

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *