আশারায়ে যিলহজ্ব : ৩ । মুফতি রিয়াজুল ইসলাম

আশারায়ে যিলহজ্ব : ৩ । মুফতি রিয়াজুল ইসলাম

২. এ মাসে বেশী বেশী ইবাদত করা।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলার নিকট আশারায়ে যিলহজ্বের আমলের চেয়ে অধিক মহৎ এবং অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সুতরাং তোমরা এই দিনগুলোতে বেশি বেশি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার এবং আলহামদু লিল্লাহ পড়।(মুসনাদে আহমদ ২/৫৭, হাদীস ৫৪৪৬)

৩. যিলহজ্বের প্রথম নয় দিন রোযা রাখা।

মুসনাদে আহমাদের একটি বর্ণনায় এসেছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই নয়টি দিবসে রোযা রাখতেন।( মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২২২৩৪)

৪. নয় যিলহজ্ব রোযা রাখা মুসস্তাহাব।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইয়াওমে আরাফার (নয় যিলহজ্ব) রোযার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, তিনি এর দ্বারা এর আগের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬২)

উল্লেখ্য যে, কেউ কেউ আরাফার দিন দ্বারা হাজীরা যেদিন আরাফার ময়দানে অবস্থান করেন সেই দিনই নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু আমাদের কাছে বিশুদ্ধতম মত হল, নয় তারিখ। কেননা আরাফার দিন আল্লাহর রাসূল রোযা রাখেননি। একারণে ফিকহবিদগণ হাজ্বীদের জন্য আরাফার দিন রোযা না রাখা উত্তম বলেছেন।

৫. তাকবীরে তাশরীক পড়া

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,

وَ اذْكُرُوا اللّٰهَ فِیْۤ اَیَّامٍ مَّعْدُوْدٰتٍ
আর তোমরা আল্লাহকে স্মরণ কর(আইয়ামে তাশরীকের)নির্দিষ্ট দিনগুলোতে।সূরা বাকারা : ২০৩

তাকবীরে তাশরীকের জন্য বিভিন্ন শব্দ হাদিসে উল্লেখ হয়েছে। তন্মধ্যে সর্বোত্তম ও সর্বজনবিদিত পাঠ হল,

الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلاالله والله أكبر، الله أكبر ولله الحمد.
মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা( ৫৬৯৬-৯৯)

তাই নয় যিলহজ্ব হতে তের যিলহজ্ব আছর পর্যন্ত মোট তেইশ ওয়াক্তের নামাযের পর একবার করে তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। জামাতে নামায পড়া হোক বা একাকি, পুরুষ বা নারী, মুকীম বা মুসাফির সকলের উপর ওয়াজিব। সালামের পর পরই কোনো কথাবার্তা বা নামায পরিপন্থী কোনো কাজ করার আগেই তাকবীরে তাশরীক পড়তে হবে।

পুরুষের জন্য জোরে পড়া ওয়াজিব। আস্তে পড়লে তাকবীরে তাশরীক পড়ার হক আদায় হবে না। আর মহিলাগণ নিচু আওয়াজে অর্থাৎ নিজে শুনতে পায় এমন আওয়াজে পড়বে। ইমাম তাকবীর বলতে ভুলে গেলে মুক্তাদীগণ ইমামের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেরা তাকবির বলবেন। এ সময় কোনো নামায কাযা হয়ে গেলে এবং ঐ কাযা এই দিনগুলোর ভিতরেই আদায় করলে সে কাযা নামাযের পরও তাকবিরে তাশরীক পড়বে।


লেখক : মুফতি ও মুহাদ্দিস, জামিয়া ইকরা বাংলাদেশ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *