আয়া সোফিয়া মসজিদে ৬৫ লাখের বেশি পর্যটক

আয়া সোফিয়া মসজিদে ৬৫ লাখের বেশি পর্যটক

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ইস্তাম্বুলের ঐতিহাসিক স্থাপনা আয়া সোফিয়া গ্র্যান্ড মসজিদ হওয়ার দুই বছর হয়েছে। দ্বিতীয় বছরে ৬৫ লাখের বেশি পর্যটক ঐতিহাসিক এই স্থাপনা পরিদর্শন করেছে বলে জানিয়েছেন ইস্তাম্বুলের সহকারি মুফতি আহমেত আকতরকগলু।

আহমেত আকতরকগলু বলেন, ইস্তাম্বুল বিজয়ের পর আয়া সোফিয়া মসিজদ হওয়ার ঘটনাটি ছিল ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। বিশ্বের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মতো আয়া সোফিয়াও বিপুল পরিমাণ পর্যটকের মনে দারুণ আকর্ষণ তৈরি করেছে।

তাই দেশি-বিদেশি পর্যটদের ভিড় লেগেই আছে এখানে। বিশেষত ঈদের ছুটির সময়ে এখানে পর্যটকদের ঢল নামে। মসজিদ হওয়ার দ্বিতীয় বছর এখানে ৬৫ লাখ পর্যটকের আগমন হয়েছে।
ইস্তাম্বুলের সহকারি মুফতি আরো বলেন, ‘সপ্তাহের ছুটির দিনেও আয়া সোফিয়া প্রাঙ্গণে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। সেদিন তুরস্কের নানা প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা ফজর নামাজে উপস্থিত হন। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠান ও স্মৃতিস্তম্ভে ভ্রমণের আয়োজন করে। তাদের কার্যক্রমে আমরা খুবই আপ্লুত।’

আহমেত আকতরকগলু আরো বলেন, ‘বিশ্বের নানা দেশ থেকে নওমুসলিমদের অনেকে আয়া সোফিয়া এসে ইসলাম গ্রহণ করছেন। এখানে এসে তারা বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে সেই মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখেন। প্রতিদিন এ ধরনের চার-পাঁচটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করি আমরা। তাদের এসব আয়োজনে আমরা সহযোগী হতে পেরে খুবই আনন্দিত।’

বর্তমানে একটি পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক আয়া সোফিয়া গ্র্যান্ড মসজিদ পরিচালিত হচ্ছে বলে জানান আহমেত আকতরকগলু। তিনি বলেন, এই কমিটির পাশাপাশি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে আয়া সোফিয়া মাদরাসায় একটি বৈজ্ঞানিক দলও গবেষণার কাজ করছে। বর্তমানে তাতে তাফসির ও হাদিস বিষয়ক পাঠদান চলছে। গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শেষ হলে আগামী সেপ্টম্বর থেকে সেখানে অনলাইন ও সরাসরি ক্লাস শুরু হবে।

১৪৫৩ সালে ইস্তাম্বুল বিজয়ের আগ পর্যন্ত ৯১৬ বছর আয়া সোফিয়া খ্রিস্টানদের গির্জা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এরপর ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০০ বছর তা মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এরপর থেকে ৮৬ বছর ঐতিহাসিক এ স্থাপনা জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অতঃপর ২০২০ সালে তা পুনরায় মসজিদের রূপে ফিরে যায়। মসজিদ হলেও তা সব ধর্ম ও বিশ্বাসের পর্যটকের জন্য উন্মুক্ত থাকে। তুরস্কের সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসা স্থাপনার মধ্যে ১৫০০ বছরের পুরনো স্থানটি অন্যতম। ১৯৮৫ সালে ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত হয় ঐতিহাসিক এই স্থাপনা।

২০২০ সালের ১০ জুলাই তুরস্কের একটি আদালত ১৯৩৪ সালের মন্ত্রিসভার আদেশ বাতিল করেন, যে আদেশের কারণে তখন আয়া সোফিয়াকে জাদুঘর করা হয়েছিল। ফলে দীর্ঘ ৮৬ বছর পর ঐতিহাসিক এ স্থাপনাটি মসজিদের ঐতিহ্যে ফিরে যাওয়ার পথ সুগম হয়। এরপর ২৪ জুলাই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের উপস্থিতিতে তাতে প্রথম জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

  • সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *