ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে পরিবর্তন আনবেন না বাইডেন

ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে পরিবর্তন আনবেন না বাইডেন

ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে পরিবর্তন আনবেন না বাইডেন

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) ঘোষণা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প; এর প্রধান অংশীদার দেশ হলো—ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান। এই অঞ্চলে বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোও অর্থনৈতিক সৃমদ্ধির পথ হিসেবে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিকে গ্রহণ করেছে। গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের জয়লাভের পর ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এর কারণ হলো জো বাইডেন বা তার পররাষ্ট্র উপদেষ্টারা কেউ ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি নিয়ে গোটা নির্বাচনি সময়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মাদ শহীদুল হক মনে করেন ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির নাম পরিবর্তন হতে পারে, কিন্তু এর বিষয়বস্তু পরিবর্তন হবে না।

২০১৭ সালের আগস্টে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে প্রথম আইপিএস ধারণা দেন। একই বছরের নভেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শিনজো আবের মধ্যে বৈঠকের পরে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আইপিএস ধারণাপত্র তৈরি করা হয়। এর মূল ভিত্তি হিসেবে আইনের শাসন, চলাচলে অবাধ স্বাধীনতা, মুক্ত বাণিজ্য, শান্তিপূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক আইন মেনে বিরোধ নিষ্পত্তি, অবকাঠামো উন্নয়নে স্বচ্ছতা ও দায়িত্বপূর্ণ ঋণ গ্রহণের কথা বলা হয়। তবে অনেক বিশেষজ্ঞের মতে চীনকে আগ্রাসী মনোভাব ঠেকানোর জন্য আইপিএস তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

জো বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহণের ফলে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির কোনও পরিবর্তন হবে না, তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে গোটা বিষয়টি ব্যবস্থাপনা করতেন সেটির বড় ধরনের পরিবর্তন হবে—এমনটিই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মাদ শহীদুল হক বলেন, ‘আইপিএস নামটা থাকবে কিনা জানি না, তবে এ অঞ্চলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবের কোনও পরিবর্তন হবে না।’ বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলোর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহার কেমন থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চাইবে এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলো যেন তাদের পাশে থাকে সেই মনোভাব নিয়ে চলতে। কারণ এখানে বড় ধরনের মার্কিন স্বার্থ রয়েছে।’ এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লেখা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক চিঠিতে উল্লেখ আছে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গণতন্ত্র চর্চাকারী দেশগুলোর একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক শান্তিপূর্ণ একটি বৈশ্বিক ব্যবস্থা তৈরি করতে সহায়তা করবে।’ উল্লেখ্য ২০১৮ সালে শহীদুল হক পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন।

ওয়াশিংটনে কাজ করেছেন এমন একজন কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির কোনও পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না, কিন্তু জনসমক্ষে এই সম্পর্কিত যে বিষয়গুলো আসবে সেটির পরিবর্তন হবে।’ উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট বা অন্য মাধ্যমে যেভাবে অন্য দেশ নিয়ে মন্তব্য করতেন, সেটি বাইডেন প্রশাসন করবে না।’

চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে কোনও পরিবর্তন আসবে কিনা জানতে চাইলে এই কূটনীতিক বলেন, ‘নীতিগত অবস্থান একই রকম থাকবে, কিন্তু জনসমক্ষে সেটি আরও পরিপক্বভাবে প্রকাশ করা হবে।’ তবে তিনি বলেন, ‘আইপিএস নিয়ে কোনও পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই, থাকলেও মানবাধিকার বিষয়ে অন্য দেশগুলোর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব এবং তার বহিঃপ্রকাশে বড় ধরনের পরিবর্তন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *