- আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ
দীনি ইলম অর্জনে লক্ষ্য হলো আল্লাহ তাআলাকে রাজী খুশি করা। নিজের আমলকে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আমলে রূপায়িত করা। এ ছাড়া দুনিয়া এবং দুনিয়া অর্জন করা হলো ‘মাতায়ে কালিল,’ অতি সামান্য বস্তু। দুনিয়া স্থায়ী নয়। দুনিয়ার কোনো মর্যাদাও নেই। তাই দুনিয়ার সবকিছু যদি একজন অর্জন করে তাতেও কোনো লাভ নেই। কারণ সে মাতায়ে কালীলের একটি অংশ মাত্র অর্জন করলো।
সুতরাং কোনো সময় দুনিয়া যেন উদ্দেশ্য না হয়। দুনিয়া কোনো সময় মাধ্যম নয়। পরকালীন সফলতার জন্য দুনিয়া কিছুতেই কাজে লাগবে না। তাই দুনিয়া কোনো সময় উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য বানানো যাবে না।
প্রতিদান কেবল আল্লাহর কাছেই চাই। নিশ্চয়ই প্রভুই উত্তম প্রতিদানদাতা।
আম্বিয়ায়ে কেরাম সব সময় পরিস্কার ভাষায় ঘোষণা করেছেন— “ওয়ামা আসআলুকুম আলাইহি আজরা। ইন আজরিয়া ইল্লা আলাল্লাহ।” ‘তোমাদের কারো কাছে কোনো প্রতিদান চাই না। প্রতিদান কেবল আল্লাহর কাছেই চাই। নিশ্চয়ই প্রভুই উত্তম প্রতিদানদাতা।’ কোনো সময় দুনিয়ার বিনিময় ; এই বিনিময় বলতে কেবল টাকা-পয়সা বিনিময় নয়, আজর-এর মধ্যে সব ধরনের বিনিময়—দুনিয়ার যে কোনো ধরনের বিনিময় হোক না কেন সে সম্পদ হোক, পদ হোক, মর্যাদা হোক, ক্ষমতা হোক, নারী-বাড়ি বা গাড়িই হোক, এ জাতীয় দুনিয়ার কোনো আজর বা বিনিময় আমাদের লক্ষ্য নয়।
আমরা একমাত্র চাই আল্লাহর কাছে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর জীবনব্যাপী যে উসওয়া-আদর্শ রেখে গেছেন সে আদর্শ আমাদেরকে এই শিক্ষাই দেয়, সাহাবায়ে কেরাম রা. মুহাদ্দিসীন, ফুকাহা, মুজতাহিদীন, মুজাদ্দিদীন এবং আমাদের আকাবির উলামায়ে দেওবন্দ সবাই এই কথাই আমাদের শিখিয়েছেন। উদ্দেশ্য পরিস্কার করেছেন। তাই তাঁরা দুনিয়ার কোনো স্বীকৃতি কখনোই আশা করেনি। আশা করেছেন আল্লাহর উত্তম পুরস্কার। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসা। এখানেই শান্তি খুঁজেছেন। এখানেই সফলতা অনুসন্ধান করেছেন। অর্জন করেছেন পরকালীন সফলতা। দুনিয়ার মর্যাদা কে দিলো আর কে দিলো না— তাতে কখনোই তাঁরা নজর দেননি। মহান আল্লাহ এ যুগের তালেবে ইলমদেরও সে পথ অনুসরণ করার তৌফিক দিন। আমীন।