ইলমের গুরুত্ব ও স্তরবিন্যাস

ইলমের গুরুত্ব ও স্তরবিন্যাস

মারকাযুল ইরশাদ আল ইসলামী, জিঞ্জিরা ঢাকায়, আলেম-উলামাদের এক মজলিসে গতকাল (১১ অক্টোবর) ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের মুফতি ও মুহাদ্দিস, আওলাদে রাসূল, সায়্যিদ মুফতি মুহাম্মাদ সালমান মানসুরপুরী ইলমের গুরুত্ব ও স্তরবিভাগ বিষয়ে সারগর্ভ বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যের চুম্বকাংশ পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো— 

তিনি বলেন, আল্লাহ তা’য়ালা কুরআনুল কারীমে রাসূল–সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম–কে জিজ্ঞাসা করে বলেছেন যে, যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান? এর উত্তর খুবই সরল যে, জ্ঞানী আর মূর্খ কখনো এক নয়। আর আল্লাহ তা’য়ালা যে জ্ঞানের কথা কুর’আনে বলছেন সেটা কোন ধরণের জ্ঞান? নিঃসন্দেহে সেই জ্ঞান পার্থিব কোন জ্ঞান নয়। সেই জ্ঞান হলো আল্লাহকে চেনার জ্ঞান, ইসলামী শরিয়তের উপর জীবন পরিচালনার জ্ঞান।

মোদ্দাকথা, শরীয়তে জ্ঞান এবং মূর্খতার মাপকাঠি হলো ‘ইলমে দ্বীন’। যিনি ইলমে দ্বীন জানেন তিনি জ্ঞানী, আর যিনি জানেন না তিনি জাগতিক পরিচয়ে যত বড় জ্ঞানী হোন না কেন আল্লাহর কাছে জ্ঞানী হিসেবে পরিগনিত নন।

ইসলামী জ্ঞান বা ইলমের তিনটি স্তরবিন্যাস রয়েছে। এই বিন্যাসকে কেন্দ্র করেই ইলম শিখার গুরুত্ব আবর্তিত হয়—

এক. ফরজ ইলম। এটি প্রত্যেক মানুষের জন্য ফরজ। কমপক্ষে এতটুকু ইলম অর্জন করা যার মাধ্যমে বিশুদ্ধভাবে কুর’আন শিখে নামায আদায় করতে পারে। সেই সাথে এতটুকু শরীয়তের বিধি-নিষেধ জানা যাতে দৈনন্দিন জীবনের জরুরী মাসায়েলগুলো মেনে চলতে পারে।

এজন্যই প্রত্যেক পিতা-মাতার জন্য দায়িত্ব যে, তারা তাদের সন্তানকে ফরজ ইলমের স্তর পূর্ণ করবে। যাতে ইহকালীন জীবনে সবসময় আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের দেখানো পথে চলতে পারে৷

দুই. ফরজে কেফায়া। কোরআন হিফজ। খতম তারাবীতে যেন পড়তে পারে। অপরকে শেখাতে পারে। পরে নিজে কোরআন-হাদীস বুঝে আলেম হতে পারে৷ মানুষের অপারগতায় একজনকে যেমন সক্ষম হতে হয় তেমন সক্ষম হতে হবে। এটাই ফরজে কেফায়া। যেমন বলা যায়, জানাযার নামায। কেউ আদায় করলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায় আর কেউ না করলে সবাই গুনাহগার হয়৷ এদের ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কুল-মাখলুক তাদের জন্য আল্লাহর কাছে কল্যাণ, রহমত এবং মাগফিরাত কামনা করতে থাকে।

তিন. উচ্চতর জ্ঞান অর্জন করা। ইলমের এক বা একাধিক বিষয়ে নিজেকে শাস্ত্রীয়ভাবে পারঙ্গম করে তোলা। আর বর্তমান সময়ে এমন আলেমদের সমাদর সর্বমহলে ব্যাপক। কেউ যদি অসুস্থ হয় তাহলে তাকে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরাণাপন্ন হতে হয়। এখানেও ব্যপারটি একই রকম। বর্তমানে এমন বিশেষজ্ঞ আলেমের অনেক প্রয়োজন। এজন্য ইলমের এক বা একাধিক বিষয়ে তাখাসসুস (বিশেষজ্ঞতা অর্জন) করা জরুরী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *