ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলায় বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া

ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলায় বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ফিলিস্তিনি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হামাস শনিবার ইসরায়েলের ওপর সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে। আশ্চর্য এ আক্রমনে গাজা উপত্যকা থেকে হাজার হাজার রকেট ছোড়া হয়। বন্দুকধারীরা বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি শহরেও প্রবেশ করেছে।ইসরায়েল বলেছে, তারা যুদ্ধের পর্যায়ে রয়েছে এবং গাজায় হামাসের ঘাঁটিতে হামলা শুরু করেছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম দক্ষিণ ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের দল ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের প্রতিবেদন করেছে।বিশ্বজুড়ে হামলার প্রতিক্রিয়া :জার্মান চ্যান্সেলর
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওলাফ শলৎস বলেছেন, ‘আজকে ইসরায়েল থেকে ভয়াবহ খবর আমাদের কাছে পৌঁছেছে। গাজা থেকে রকেট ফায়ার এবং ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। জার্মানি হামাসের এ হামলার নিন্দা করে এবং ইসরায়েলের পাশে আছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট
শনিবার ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেছেন, তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন। তিনি এক্সে বলেন, ‘আমি ভুক্তভোগী। তাদের পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আমার পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছি।’
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয় ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

তারা বলেছে, ‘আমরা বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি উপদল ও ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর মধ্যে অভূতপূর্ব ঘটনা অনুসরণ করছি, যা বেশ কয়েকটি ফ্রন্টে উচ্চ স্তরের সহিংসতার দিকে পরিচালিত করেছে।’মিসরীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
মিসর রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার প্রচারিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য ‘গুরুতর পরিণতি’ সম্পর্কে সতর্ক করেছে। তারা ‘সর্বোচ্চ সংযম অনুশীলন ও বেসামরিক নাগরিকদের আরো বিপদের সম্মুখীন এড়াতে’ আহ্বান জানিয়েছে।ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জেমস ক্লেভারলি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি পোস্টে বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্য দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামাসের ভয়াবহ হামলার নিন্দা করে। যুক্তরাজ্য সর্বদা ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করবে।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট
এক্সে এক পোস্টে উরসুলা ভন ডের লায়েন বলেছেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাস পরিচালিত হামলার নিন্দা জানাই। এটি সবচেয়ে ঘৃণ্য আকারে সন্ত্রাসবাদ। এই ধরনের জঘন্য হামলার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আত্মরক্ষা করার অধিকার আছে।’ইইউ পররাষ্ট্র নীতির প্রধান
জোসেপ বোরেল এক্সে বলেছেন, ‘আমরা ইসরায়েল থেকে আসা খবরকে যন্ত্রণার সঙ্গে অনুসরণ করি। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে হামাসের হামলার নিন্দা জানাই। এই ভয়ানক সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। সন্ত্রাস ও সহিংসতা কিছুই সমাধান করে না।’তুর্কি প্রেসিডেন্ট
আংকারায় তার ক্ষমতাসীন একে পার্টির এক কংগ্রেসে এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা সব দলকে সংযমের আহ্বান জানাই। তাদের অবশ্যই আক্রমণাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।’

নেদারল্যান্ডস
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘ইসরায়েলের ওপর হামাসের নজিরবিহীন হামলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে এইমাত্র কথা হয়েছে। আমি তাকে বলেছি, নেদারল্যান্ড দ্ব্যর্থহীনভাবে এই সহিংসতার নিন্দা করে এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।’

রাশিয়া
রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল বোগদানভের বরাত দিয়ে ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাত বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রাশিয়া ইসরায়েল, ফিলিস্তিনি ও আরব দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে।

তিনি বলেন, ‘এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে আমরা সর্বদা সংযমের আহ্বান জানাই।’

হিজবুল্লাহ
ইসরায়েলের চিরশত্রু ও ইরান সমর্থিত লেবানিজ গ্রুপ হিজবুল্লাহ শনিবার একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে, তারা গাজার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ‘ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছে’।

গাজার বিদ্রোহীরা ইসরায়েলে রকেটের ঢেউ নিক্ষেপ করার পর বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে, এটি ‘ইসরায়েলের অব্যাহত দখলদারিত্বের একটি নিষ্পত্তিমূলক প্রতিক্রিয়া এবং ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিককরণের চেষ্টাকারীদের জন্য একটি বার্তা’।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
মন্ত্রণালয় এক্সে বলেছে, ‘ইউক্রেন জেরুজালেম ও তেল আবিবের বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে রকেট হামলাসহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলমান হামলার তীব্র নিন্দা করে। আমরা ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার এবং তার জনগণের প্রতি আমাদের সমর্থন প্রকাশ করি।’

পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জেডবিগনিউ রাউ এক্সে বলেছেন, ‘আমি ইসরায়েলের ওপর হামাসের চলমান হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। এই ভিত্তিহীন আগ্রাসন ও সহিংসতা, বিশেষ করে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে, অগ্রহণযোগ্য। আমাদের চিন্তা-ভাবনা ও প্রার্থনা এই ভয়ানক ঘটনাগুলোতে প্রভাবিত সবার সঙ্গে আছে।’

চেক প্রেসিডেন্ট
পেট্র পাভেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকা থেকে পরিচালিত হামলাটি ইসরায়েল ও বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের একটি নিন্দনীয় কাজ। ইসরায়েলে রকেট হামলা এবং হামাস কমান্ডোদের অনুপ্রবেশ দীর্ঘ সময়ের জন্য ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করবে।’

অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত ও গোপনীয়’ বলে অভিহিত করে তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ইসরায়েলের এই বর্বর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা করার অধিকার রয়েছে। ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা যা দেখেছি তার থেকে এই হামলা অনেক বড়। এটি সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা।’

ইতালি
দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইতালীয় সরকার ইসরায়েলে সংঘটিত নৃশংস হামলাকে ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করছে। এটি নিরীহ বেসামরিকদের বিরুদ্ধে চলমান সন্ত্রাস ও সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানায়। সন্ত্রাস কখনই জয়ী হবে না। আমরা ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করি।’

সুইস ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স
বিভাগটি এক্সে বলেছে, ‘আমরা অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করার এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আহ্বান জানাই।’

বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
হাদজা লাহবিব এক্সে বলেন, ‘বেলজিয়াম ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক রকেট হামলার তীব্র নিন্দা করে। সহিংসতা ও সন্ত্রাস কেবল দুর্ভোগকে স্থায়ী করে এবং সংলাপের পথকে বাধাগ্রস্ত করে। আমাদের চিন্তা-ভাবনা ক্ষতিগ্রস্ত সবার সঙ্গে আছে। আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’

গ্রিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
মন্ত্রণালয় এক্সে পোস্ট করে বলেছে, ‘গ্রিস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজা থেকে আজকের ভারী রকেট হামলার তীব্র নিন্দা জানায়। গ্রিস ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং সহিংসতার এই অগ্রহণযোগ্য বৃদ্ধির জন্য গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

সূত্র : রয়টার্স

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *