ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান সংঘাতে হতাহতের ঘটনাকে “বর্ণবাদ ও গণহত্যা” আখ্যা দিয়ে ইসরায়েলের নেতাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মামলা করেছে তিনটি মানবাধিকার সংগঠন।

বুধবার (৮ নভেম্বর) ফিলিস্তিনি সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস, আল হক ও আল মেজান নামে তিনটি সংগঠন এ মামলা করে।

তিনটি সংগঠনের দাবি, গাজা উপত্যকার ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলা বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, ১০,৫০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যাদের প্রায় অর্ধেক শিশু।

মামলায় গাজার ওপর শ্বাসরুদ্ধকর অবরোধ, বাসিন্দাদের জোর করে সরিয়ে দেওয়া, বিষাক্ত গ্যাসের ব্যবহার, খাদ্য ও পানির মতো দ্রব্য আনতে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে দাবি করা হয়।

মামলায় বলা হয়েছে, এই কাজগুলো যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, সেখানে গণহত্যাও চলছে।

তিনটি সংগঠন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ চেয়েছে।

২০২১ সালে ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে আইসিসির অফিস অব প্রসিকিউটর (ওটিপি)। যেখানে পূর্ব জেরুজালেম এবং গাজা উপত্যকাসহ পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের যুদ্ধাপরাধ আমলে নিয়ে তদন্ত করা হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে গাজায় চলমান নিপীড়ন নিয়ে মুখ না খোলায় তিনটি মানবাধিকার সংগঠনই ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল।

নথিতে মানবাধিকার সংগঠনের আইনজীবী ইমানুয়েল দাউদ ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের জন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির রায়ের কথা উল্লেখ করেন। যেখানে এই আইনজীবী বলেন, “আন্তর্জাতিক বিচারে দুইরকম মানদণ্ডের কোনো জায়গা নেই।”

তিনি বলেন, “ইউক্রেন বা ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হোক না কেন, অপরাধীদের জবাবদিহি করতে হবে।”

গাজায় এক মাসের যুদ্ধ চলাকালীন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিসির কাছে মামলার ঘটনা এটাই প্রথম নয়।

গত ৩১ অক্টোবররিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) গাজায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে সংস্থার কাছে একটি অভিযোগ জমা দেয়।

গত ৭ অক্টোবর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৯ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছে।

প্রেস ফ্রিডম গ্রুপ কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) এর পরিসংখ্যান অনুসারে, যাদের মধ্যে ৩৪ জন ফিলিস্তিনি, চারজন ইসরায়েলি ও একজন লেবানিজ।

গত ২৯ অক্টোবর আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খান মিশরের রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং পরিদর্শন করার সময় অতিরিক্ত সম্ভাব্য অপরাধের দিকে ইঙ্গিত করেন। তার মতে, “বেসামরিকদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে বাধা দেওয়ায় রোম সংবিধির অধীনে বিচার করা যেতে পারে।”

তিনি বলেন, “শিশু, নারী ও পুরুষ, বেসামরিক মানুষের কাছে মানবিক ত্রাণ সরবরাহে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা উচিত নয়।”

“তারা নির্দোষ, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনে তাদের অধিকার রয়েছে। এই অধিকার জেনেভা কনভেনশনের অংশ ও রোম সংবিধির অধীনে এই অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করা হলে সেটি অপরাধমূলক ঘটনা।”

তবে ইসরায়েল আইসিসির সদস্য নয়। তারা আদালতের এখতিয়ার প্রত্যাখ্যান করেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *