ইসলামে মাদক নিষিদ্ধ

ইসলামে মাদক নিষিদ্ধ

মাসউদুল কাদির : ইসলামে মাদক নিষিদ্ধ। মাদক একদিনেই নিষিদ্ধ হয়নি। ধীরে ধীরে তা নিষিদ্ধের পর্যায়ে আনা হয়েছে। প্রথমে কুরআনে মাদকাসক্ত অবস্থায় সালাত আদাইয়ে নিষেধ করা হয়েছে। মুমিনগণও ধীরে ধীরে নিজেদেরকে মানিয়ে নিয়েছেন। নিষিদ্ধ মাদকতা ইসলামের সৌন্দর্য বিনষ্ট করে।

মাদকগ্রহণ সুস্থ ও সুন্দর মানুষের কাজ নয়। ইসলাম তো শ্বাসত সৌন্দর্যের পবিত্র এক সামীয়ানা। এ আরশের ছায়ায় অপবিত্রতা নেই। মাদকতা নেই। ধোঁকার কোনো আশ্রয় নেই। মদপানে মানুষের জীবনদুর্বিষহ হয়ে যায়। বিপজ্জনক এক অবস্থার আবর্তে ও খাদের কিনারে এসে দাঁড়ায়। এমনকি মানুষ জীবন নিয়েও সঙ্কটে পড়ে। এ জন্য কুরআনে নিজেকে হত্যা না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না।’ [সূরা নিসা : আয়াত ২৯]।
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা নিজেদের হাতে নিজেদেরকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করবে না। [সূরা বাকারা : আয়াত ১৯৫]।

এ জন্যই মদপানকে ইসলামে নিষেধ করা হয়েছে। মদপান মানে নিজেকে হত্যার শামিল। মদ্যপ ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়ে। মহান আল্লাহ তাআলা আশরাফুল মাখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেনে। সুতরাং আল্লাহ তাআলা কখনোই কারো ক্ষতি চান না। মানুষের কল্যাণই ইসলামের ধর্ম। তাই কুরআনে আল্লাহ বলছেন, হে মুমিনগণ, নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি এবং ভাগ্যনির্ধারক শরসমূহ শয়তানের অপবিত্র কাজ। অতএব এগুলো বর্জন করো, তাহলে তোমরা সফলতা অর্জন করতে পারবে। শয়তান চায় মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হোক এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে চায়। তবু কি তোমরা নিভৃত হবে না? [সূরা মায়েদা : আয়াত ৯০ ও ৯১]।

মানুষকে মূলত একটা সম্মানীয় অবস্থান দিয়ে আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। এটা কুরআনেও স্পষ্ট এসেছে। এ জন্য যে, মানুষ নিজেকে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে। মানুষ যেনো নিজের মর্যাদা বুঝতে পারে। নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে না দেয়। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি। আমি তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের জন্য বাহন দান করেছি, তাদেরকে উত্তম রিজিক দান করেছি এবং অনেক সৃষ্ট বস্তুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। [সূরা বানী ইসরাইল : আয়াত ৭০]

হযরত আনাস রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাদকাসক্ত দশব্যক্তির ওপর অভিশাপ করেছেন। এক. যে ব্যক্তি মদ জাতীয় বস্তুর নির্যাস বের করে, দুই. যে ব্যক্তি মদ প্রস্তুত করে, তিন. যে ব্যক্তি মদপান করে, চার. যে ব্যক্তি মদপান করায়, পাঁচ. যে ব্যক্তি মদ আমদানি করে, ছয়. যার জন্য মদ আমদানি করা হয়, সাত. মদ বিক্রেতা, আট. মদ ক্রেতা, নয়. অন্যকে সরবরাহকারী এবং দশ. মদের লাভের অংশ ভোগকারী। [ইবনে মাজাহ]

মদ সবসময় অকল্যাণকর। মাদকে সমাজের স্বাভাবিক গতি বিনষ্ট নয়। তাই মদ ও মাদক থেকে দূরে থাকা প্রত্যেকটি মানুষেরই জন্য কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মাদকের কুফল থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। আমীন।
mkadir1983@gmail.com

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *