পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : দেশে উড়োজাহাজের জ্বালানি জেট এ-১ ফুয়েলের মজুদ শেষ হয়ে আসছে। খুব শিগগির এই জ্বালানির বর্তমান মজুদ শেষ হয়ে যাবে। এ সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে দেশের বিমান চলাচল ব্যাহত হতে পারে। জ্বালানি সংকটের কারণে বিমানের টিকিটের দাম বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জেট এ-১ ফুয়েল সরবরাহকারী সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁদের জেট এ-১ ফুয়েল ১ জানুয়ারি পর্যন্ত মজুদ আছে। আগামী ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে আসছে জেট এ-১ ফুয়েলবাহী জাহাজ। কাজেই জ্বালানি সংকট হবে না।
বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির পর পদ্মা অয়েল কম্পানির মাধ্যমে জেট ফুয়েল বিপণন করে বিপিসি।
জেট ফুয়েলের মজুদ শেষ হয়ে আসার বিষয়ে বিপিসির বাণিজ্য ও অপারেশন বিভাগকে ২৪ ডিসেম্বর চিঠি দিয়েছে পদ্মা অয়েল কম্পানি।
পদ্মা অয়েল কম্পানি লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক (পরিচালন) মো. আসিফ মালেক স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে বিক্রয়যোগ্য জেট এ-১ ফুয়েল মজুদ রয়েছে ৯ হাজার ২১ টন। তা থেকে দৈনিক গড় বিক্রির পরিমাণ এক হাজার ৫০৮ টন ধরলে এই জ্বালানি আর মাত্র ছয় দিন বিক্রি করা সম্ভব। অর্থাৎ বর্তমান মজুদ থেকে জেট এ-১ ফুয়েল ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিক্রি করা যাবে।
এমন পরিস্থিতিতে চিঠিতে দেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জেট এ-১-এর বিক্রয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় ২৯ ডিসেম্বরের পর ২০২৪ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতি মাসে উল্লিখিত পরিমাণ জ্বালানি আমদানির অনুরোধ জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিপিসির কাছে জ্বালানি তেল সরবরাহকারী ছয়টি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের পাওনা রয়েছে ২৯ কোটি ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার। দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া থাকা সেই অর্থ পরিশোধে তাগিদ দিলেও দেশে ডলার সংকট থাকায় বিপিসি দিতে পারছে না।
জ্বালানিসচিবকে গত ১১ ডিসেম্বর দেওয়া জরুরি চিঠিতে বিপিসি চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর পাওয়ার বিস্তারিত হিসাব তুলে ধরেন। সংকট উত্তরণে প্রতিদিন ছয়-সাত কোটি ডলার বকেয়া পরিশোধ ছাড়া অন্য উপায় নেই বলে জানিয়েছে বিপিসি।
বিপিসি ও চট্টগ্রাম বন্দরের জাহাজ বার্থিং তথ্যে দেখা যায়, গত ২৩ ডিসেম্বর হংকং থেকে ‘কুই চি’ নামের জাহাজ সাড়ে ৯ হাজার টন জেট ফুয়েল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে এসেছে। জাহাজটিকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসার কথা রয়েছে আজ ২৯ ডিসেম্বর। আরেকটি জাহাজ ‘নর্থ মাজেস্টিক’ সিঙ্গাপুর থেকে জেট এ-১ ফুয়েল নিয়ে আসবে। নির্ধারিত সময়ের আগেই বন্দরে পৌঁছার অনুরোধ জানিয়ে জাহাজগুলোর ক্যাপ্টেনকে ই-মেইলে বার্তা পাঠিয়েছে বিপিসি। তবে এসব ফুয়েল বন্দর থেকে খালাস হতে কমপক্ষে আরো দুই থেকে তিন দিন সময় লাগবে।
এ ব্যাপারে জানতে বিপিসি চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি সাড়া দেননি। সংস্থাটির পরিচালক (বিপণন) অনুপম বড়ুয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর জেট এ-১ ফুয়েলবাহী দুটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়বে। এ ছাড়া আমাদের নতুন বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ফুয়েল মজুদ রয়েছে। বন্দর থেকে জ্বালানি দ্রুত খালাস হলে জেট এ-১ নিয়ে কোনো সংকট হবে না।