উত্তরাঞ্চলে শীতের পদধ্বনি

উত্তরাঞ্চলে শীতের পদধ্বনি

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ভোরবেলা বয়ে যাচ্ছে হালকা হিমেল হাওয়া। ঘুমের ঘোরে কাঁথাও জড়াতে হচ্ছে। ঘরের বাইরে গেলে ঠান্ডা বোধ হয়। ভোরে দেখা দিচ্ছে কুয়াশা। ঘাস কিংবা ধানখেতে জমছে শিশিরবিন্দু। দিনাজপুরসহ দেশের উত্তর জনপদে অক্টোবর মাসের শেষ দিকে এসে আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য দেখে শীতের আগমনি বার্তাই পাওয়া যাচ্ছে।

আবহাওয়া অফিসের সোমবারের দেওয়া তথ্যমতে, দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দেশের সর্ব উত্তরের উপজেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ছিল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাংলাদেশে হাড় কাঁপানো শীত থাকে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। তবে তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর নিচে নামার রেকর্ড আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে নেই।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বিগত ৬৪ বছরের মধ্যে দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল শ্রীমঙ্গলে ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। ১৯৬৪ সালের ২৭ জানুয়ারি ঈশ্বরদীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল দিনাজপুরে ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদদের মতে, বাংলাদেশের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সমান বা এর নিচে নেমে এলে তাকে শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

গতকাল সোমবার ভোরে দেখা যায়, কচি ধান পাতায় জড়িয়ে রয়েছে মুক্তোর মতো শিশিরবিন্দু, ঘাসের ওপর ভোরের সূর্য কিরণে হালকা লালচে রঙের ঝিলিক দিচ্ছে বিন্দু বিন্দু শিশির কণা। এসব দৃশ্যই শীতের আগমনি বার্তা দিচ্ছে উত্তরের এই জনপদে।

হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা জেলা দিনাজপুর। এ কারণেই এই জেলার প্রতিটি উপজেলায় প্রতি বছর কনকনে হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হয়। স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে এ বছর আগাম শীত অনুভব হচ্ছে। দিনের বেলা কিছুটা গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাত যত গভীর হয় কুয়াশা তত বেড়ে হালকা বৃষ্টির মতো টিপটিপ করে ঝরতে থাকে। বিশেষ করে মাঠে ঘাসের ডগায় ও ধানের শিষে জমতে দেখা গেছে বিন্দু বিন্দু শিশির।

উত্তর থেকে আসছে শিরশিরে ঠান্ডা বাতাস। ভোরের প্রকৃতিতে হাত বাড়ালেই ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। কয়েক দিন থেকে শেষ রাতে গায়ে কাঁথা চাপাচ্ছেন অনেকেই। যদিও দিনে গরমের তীব্রতা খুব একটা কমেনি।

গ্রামগুলোতে পুরোনো কাঁথা নতুন করে সেলাই করে নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা। বাড়ির পাশে গাছের নিচে বসে রং-বেরঙের সুতো দিয়ে তারা তৈরি করছেন কাঁথা আর সেই সঙ্গে জমে উঠেছে গল্প এবং আড্ডা। বাজারে লেপ তোশক তৈরি শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *