উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পানি বাড়ার আভাস

উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পানি বাড়ার আভাস

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের ১১০টি স্টেশনের মধ্যে ৪২টি পয়েন্টে পানি কমার প্রবণতা দেখা গেলেও ৬৩ পয়েন্টে বাড়ছিল আর অপরিবর্তিত ছিল পাঁচ পয়েন্টে।

সিলেট অঞ্চলের নদীর পানি কমতির দিকে থাকলেও দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদীর পানি বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

শনিবার কেন্দ্রের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ৯টায় দেশের ১০টি নদীর পানি ২১টি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছিল। ওই সময় বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের ১১০টি স্টেশনের মধ্যে ৪২টি পয়েন্টে পানি কমার প্রবণতা দেখা গেলেও ৬৩ পয়েন্টে বাড়ছিল আর অপরিবর্তিত ছিল পাঁচ পয়েন্টে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীর পানি সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে।

তাতে তিস্তা নদীর পানি কিছু পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদী সংলগ্ন কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হতে পারে।

এসময়ে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যমুনাশ্বরী, করতোয়া, বাঙ্গালী, আপার করতোয়া, পুর্নভবা, টাঙ্গন, ইছামতি-যমুনা, আত্রাই, মহানন্দা এবং ছোট যমুনা নদীর পানিও বাড়তে পারে।

তবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি সার্বিকভাবে কমছে, এ অবস্থা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

তাতে এ সময়ে এই এলাকার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে।

বুলেটিনে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি স্থিতিশীল আছে; আগামী ২৪ ঘণ্টায় কমতে পারে। এদিকে যমুনা নদীর পানি বাড়ছে, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে।

গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানিও বাড়ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

তবে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরিস্থিতি সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল থাকতে পারে। ৭ তারিখের দিকে উন্নতির দিকে যাবে, তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে ১১ তারিখ পর্যন্ত লেগে যাবে।”

এবার জুনের শুরুতে প্রবল বর্ষণ আর উজানের ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। কয়েক দিন পর পরিস্থিতির উন্নতি হলেও গত ১৭ জুন কোরবানির ঈদের আগের দুদিন থেকে টানা বৃষ্টিতে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণাসহ আশেপাশের জেলার অনেক এলাকা ডুবে যায়। উজানের ঢলে জুলাইয়ের শুরুতে নতুন করে বন্যা দেখা দেয় ওই তিন জেলায়।

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে বন্য পূর্বভাস কেন্দ্র বলছে, দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে

শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৯২ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায়। এছাড়া রংপুরে ১৩২, কক্সবাজারে ১২০, নীলফামারীর ডিমলায় ৯৪, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ৮৬, নোয়াখালীর হাতিয়ায় ৮২ মিলিমিটারসহ প্রায় সারাদেশেই কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে।

সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *