পাথেয় টুয়েন্টিফোর ডটকম: ভারতে বিধানসভা ভোটের আগে মধ্য প্রদেশে কয়েক লাখ নেতাকর্মীকে নিয়ে ‘কার্যকর্তা মহাকুম্ভ’ নামের কর্মিসভা শুরু করল বিজেপি। রাজধানী ভোপালে আয়োজিত ওই কর্মসূচির সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন কংগ্রেসকে।
কংগ্রেসকে ‘মরিচা পড়া লোহা’র সঙ্গে তুলনা করে মোদি বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘদিন ওই দল মধ্য প্রদেশকে শাসন করেছে। তাদের আমলেই মধ্য প্রদেশকে ‘বিমারু রাজ্যে’ (উন্নয়ন ও অর্থনীতির নিরিখে দুর্বল রাজ্য) পরিণত করেছিল।
” কংগ্রেসের সঙ্গে ‘শহুরে নকশালপন্থী’দের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলেও দাবি করেন মোদি।
বিজেপির দুই দশকের শাসনে মধ্য প্রদেশের অর্থনীতি ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে বলেও দাবি করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারে বিজেপির শাসনে ১৩ কোটি ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার ঊর্ধ্বে উঠেছে।’
মানুষের প্রত্যাশা পূরণে অক্ষম হওয়ার কারণেই কংগ্রেস রাজনৈতিকভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে বলে দাবি করে মোদির মন্তব্য, ‘কংগ্রেস ও তার সহযোগীরা কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতায় এলে মহিলা সংরক্ষণ বিলও হিমঘরে চলে যাবে।
’ এর পরই কংগ্রেসকে মরিচা পড়া লোহার সঙ্গে তুলনা করে মোদি বলেন, ‘এখনো ওই দল শুধু দুর্নীতি, দারিদ্র্য ও তোষণের প্রতীক।’
বস্তুত ভোটের মধ্য প্রদেশে গিয়ে সে রাজ্যের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের জনমুখী প্রকল্পের চেয়েও সোমবার মোদির বক্তৃতায় বেশি প্রাধান্য পেয়েছে সর্বভারতীয় রাজনীতির প্রসঙ্গ। ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে জিতে মধ্য প্রদেশে কংগ্রেস ক্ষমতা দখল করলেও দেড় বছরের মাথাতেই রাজ্যসভার সদস্য জ্যোতিরাদিত্যের সাহায্যে দুই ডজন বিধায়ক ভাঙিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের সরকারের পতন ঘটিয়েছিল বিজেপি। চলতি বছরের শেষে ছত্তিশগড়, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, মিজোরামের সঙ্গেই মধ্য প্রদেশে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা।
বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা বলছে, সে রাজ্যে এবার বিজেপিকে চাপে ফেলতে পারে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে গত কয়েক মাসে একের পর এক বিজেপি নেতা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।
গত মে মাসে তিনবারের বিজেপি বিধায়ক তথা সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কৈলাস জোশীর পুত্র দীপক যোগ দেন রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খাড়গের দলে। তার সঙ্গে সাবেক বিজেপি বিধায়ক রাধেলাল বঘেলও দল বদলান। জুন মাসে জ্যোতিরাদিত্যের দুই প্রভাবশালী অনুগামী, শিবপুরী জেলার নেতা বৈজনাথ সিং ও রাকেশকুমার গুপ্ত ‘পদ্ম’ ছেড়ে ‘হাত’ ধরেছেন।
আগস্টে প্রভাবশালী দুই সাবেক বিধায়ক ভঁওয়র সিংহ শেখাওয়াত ও আশিস আগরওয়াল এবং সেপ্টেম্বরে প্রমোদ টন্ডন, রামকিশোর শুক্ল, দীনেশ মালহরের মতো প্রবীণ বিজেপি নেতারা যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা