পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ফেনীর পরশুরামে মেয়ের ছোড়া গরম তেলে ঝলসে যাওয়ার ঘটনায় করা মামলায় অভিযুক্ত ফাতেমা আক্তার নিহাকে (১৩) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (২ মার্চ) রাতে পরশুরাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে এদিন দুপুরে দগ্ধ মো. নূর নবী বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে পরশুরাম মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নিহার নানা ও ভুক্তভোগীর সাবেক স্ত্রীর বাবা পৌরসভার দক্ষিণ কোলাপাড়া এলাকার মনির আহম্মদ (৬০), তার ছেলে মো. জাবেদ (৩০) ও ভুক্তভোগীর ভাই বাঁশপদুয়া এলাকার মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রহিম (৩৯)। তাদের মধ্যে মো. জাবেদকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি নূর নবীর বাড়িতে গিয়ে নিজেদের পল্লী বিদ্যুতের লোক দাবি করে দরজা খুলতে বলেন হেলমেট পরা দুই যুবক। তখন ভেতর থেকে শিশুরা দরজা খুলে দিলে তারা (দুই যুবক) ঘরের ভেতরে ঢুকে শিশু লামিয়াকে (৭) স্কচটেপ দিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে হত্যা করে। এ সময় বড় বোন ফাতেমা আক্তার নিহা পালিয়ে গিয়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। গত কয়েক দিন আগে এ ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী নিহাকে কে বা কারা বাড়ির বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। পরবর্তী বিষয়টি নিয়ে নিহার কাছে তার বাবা জানতে চাইলে তাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। সর্বশেষ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় তার বাবাকে গরম তেলে ঝলসে দেয় নিহা। পরে দুই দিন ধরে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের পর নিহার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাকে ও মো. জাবেদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার আরেক আসামি আব্দুর রহিম বলেন, এ ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। আমাদেরকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মূলত লামিয়া হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে এমনটি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পরশুরাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম বলেন, ভুক্তভোগীর মেয়ে নিহার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার বাবা একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার জাবেদকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নিহাকে গাজীপুর সংশোধনাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনাটি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, শিশু লামিয়া হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে নিহতের মা আয়েশা আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। কয়েক মাস কারাভোগের পর বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। গত বছরের ১৫ মার্চ এ ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী লামিয়ার বড় বোন ফাতেমা আক্তার নিহার বর্ণনা অনুযায়ী হত্যাকারীদের ছবি (স্কেচ) এঁকে নিয়েছিল পুলিশ। তবুও পুলিশ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে পারেনি।