ওপারে থেমে থেমে গুলি, এপারে আয়-রোজগার নিয়ে দুশ্চিন্তায় মানুষ

ওপারে থেমে থেমে গুলি, এপারে আয়-রোজগার নিয়ে দুশ্চিন্তায় মানুষ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: কক্সবাজারের উখিয়ায় ও টেকনাফ সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গতকাল মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা গেছে। বেলা ৩টা পর্যন্ত শোনা যায় গুলির শব্দ। তবে উখিয়ায় গুলির শব্দ শোনা গেলেও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত। দুই দিন ধরে সেখানে গুলির শব্দ শোনা যায়নি।

এদিকে, টেকনাফ-উখিয়ার সীমান্তবর্তী অন্তত ৩০টি গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের বড় দুশ্চিন্তা আছেন আয়-রোজগার নিয়ে। কাজকর্ম নেই ১০ দিনের বেশি সময় ধরে। আয় না থাকায় ক্ষুদ্র সঞ্চয় ভেঙেও কুলাচ্ছে না। সংসার চালাতে বিপাকে পড়েছেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল সীমান্তের ওপারে ঢেঁকিবনিয়া ও চাকমাকাটা এলাকায় গতকাল সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি হয়। পরে গোলাগুলি বাড়ে। তবে ভারী গোলাবর্ষণ ও মর্টার শেলের শব্দ শোনা যায়নি। অন্যদিকে একই সময়ে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উত্তরপাড়া সীমান্তের ওপারে কুমিরখালী এলাকা থেকেও ছিল একটানা গুলির শব্দ।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উত্তরপাড়া ও উনচিপ্রাং সীমান্ত এলাকায় বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা একটানা গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়। এ সময় বিজিবিকে সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা যায়।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, সীমান্ত এলাকায় সকাল থেকে মুহুর্মুহু গুলির শব্দ শোনা গেছে। কয়েক দিন আগে গুলি মানুষের দোকানপাট ও বসতবাড়িতে পড়েছে। গতকাল গুলি না পড়লেও কখন কী ঘটে যায়, এ নিয়ে লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন।

কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং বাজার থেকে আধা কিলোমিটার পূর্বে উত্তরপাড়া। সেখানে বেশির ভাগ খেটে খাওয়া মানুষ। মাছ ধরে, বিক্রি করে বা দিনমজুরি করে সংসার চালান তারা।

তাদের একজন জেলে বলেন, আগের জমানো টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন করে ঋণ করতে হয়েছে। মাছ না ধরলে কিংবা কাজ করতে না পারলে কী খাব।

উত্তরপাড়ায় কথা হয় এক গৃহবধূ সঙ্গে। তার স্বামীও মাছ ধরেন। তিনি বলেন, কিছু টাকা ঋণ নিয়েছেন একটি সংস্থা থেকে। সপ্তাহে ১ হাজার ৮০০ টাকা করে কিস্তি দিতে হয়। কিন্তু স্বামীর আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিস্তি দিতে পারছি না। কিস্তির জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।

উত্তরপাড়ার স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘কষ্টে থাকা মানুষের সাহায্যের জন্য চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সরকারকে জানিয়েছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *