কওমি শিক্ষার স্বীকৃতিতে শক্তিশালী হবে জাতীয় ঐক্য

কওমি শিক্ষার স্বীকৃতিতে শক্তিশালী হবে জাতীয় ঐক্য

আল্লামা আহমদ শফীকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের একান্ত ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এ দেশের প্রায় বিশ লাখ শিক্ষার্থীরা পেল শিক্ষা স্বীকৃতি। এটা ঐতিহাসিক ঘটনা। বাংলাদেশে বার বার সরকার এসেছে, সরকার বদল হয়েছে কেউই কিন্তু এটা নিয়ে ভাবেনি। বরং প্রধানমন্ত্রী নিজেই শোকরানা মাহফিলে অভিযোগ করেছেন, জিয়াউর রহমান কওমী মাদরাসার যে স্বীকৃতিটা ছিল সেটা ১৯৭৭ এ মুছে দিয়ে গেছেন। এবার সত্যিকার অর্থেই কওমী মাদরাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা যে শোকরানা জানিয়েছে তা অভূতপূর্ব। ভুলবার নয়।

আমরা জানি, কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ সনদ দাওরায়ে হাদিসকে ইসলামিক স্টাডিজের মাস্টার্সের সমমানের স্বীকৃতি দেওয়ায় গত রোববার শোকরানা মাহফিলের আয়োজন করেছিল কওমি মাদরাসাগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা আল হাইয়াতুল উলয়া-লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। লাখ লাখ কওমি শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষা তখনই পূর্ণাঙ্গ হয়, যখন ধর্মীয় শিক্ষাও গ্রহণ করা যায়। লাখ লাখ শিক্ষার্থী কওমি মাদরাসায় পড়াশোনা করছেন। তাদের সে শিক্ষার যদি স্বীকৃতি না থাকে তবে তারা কোথায় যাবেন? যে কারণে সরকার কওমি মাদরাসার শিক্ষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট, মসজিদভিত্তিক উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ সম্প্রসারণ, স্বতন্ত্র আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বাংলাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কালচারাল সেন্টার করার উদ্যোগও হাতে নিয়েছে।  কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ সনদ স্বীকৃতি পাওয়ায় কওমি শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে চাকরি পাবেন, তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন।

দেশের শীর্ষ আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোকরানা মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, যারা এতিমদের শিক্ষা দেন তাদের স্বীকৃতি আমরা কেন দেব না? সবচেয়ে বড় কথা যারা এতিম ও হতদরিদ্র, যাদের যাওয়ার জায়গা নেই কওমি মাদরাসায় তাদের ঠাঁই মিলছে। তাই সরকার তাদের স্বীকৃতিদানে এগিয়ে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী শোকরানা মাহফিলে কওমি মাদরাসার স্বীকৃতির প্রশ্নে যে বক্তব্য রেখেছেন তা তাৎপর্যের দাবিদার। এ স্বীকৃতির মাধ্যমে লাখ লাখ কওমি শিক্ষার্থীকে দেশের শিক্ষার মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে কওমি মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ইসলামের ভুল ব্যাখ্যাকারী মওদুদীবাদীদের বিরোধী। তাদের প্রাপ্য মর্যাদা দিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকেই বরং সুসংহত করা হয়েছে।

এ স্বীকৃতি দেশ গঠন ও জাতীয় ঐক্য জোরদারে কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের বৃহত্তর ভূমিকা নিশ্চিত করবে বলে আমরা আশাবাদি। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বড় সহায়ক শক্তি হবে এই মাদরাসা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *