পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : চীনের গবেষণাগারে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে অভিযোগ করেছেন তা ‘অনুমাননির্ভর’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)।
সোমবার (০৪ মে) ভার্চুয়াল এক ব্রিফিংয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি কর্মকাণ্ড বিষয়ক পরিচালক মাইকেল রায়ান বলেন, ‘ভাইরাসের উৎসের বিষয়ে আমেরিকার কাছ থেকে আমরা কোনো তথ্য বা সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাইনি। কাজেই আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি অনুমাননির্ভরই রয়ে গেছে।’
রায়ান আরও বলেন, ‘ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে অনুমাননির্ভর তদন্ত করা হয়। তবে এর মোকাবিলা করা আরও বেশি কঠিন। এটি একটি রাজনৈতিক বিষয়। বিজ্ঞান সবকিছুর কেন্দ্রে থাকা প্রয়োজন।’
সোমবারের ব্রিফিংয়ে বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভ্যান কেরখোভ জোর দিয়ে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের ১৫ হাজার পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স রয়েছে এবং আমরা এমন সব প্রমাণ পেয়েছি যে তা দেখে বুঝেছি ভাইরাসটির উৎস প্রাকৃতিক।’
এদিকে, আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিজেসের পরিচালক ডা. অ্যান্টনি স্টিফেন ফাউসি সোমবার ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুরে সুর মিলিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস চীনের ল্যাবরেটরি থেকে ছড়িয়েছে; এমন কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।’
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় এ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, ‘আপনি যদি বাদুড় কিংবা অন্য কিছুর মধ্যে এই ভাইরাসের (করোনা-প্রজাতির) বিবর্তনের দিকটা খেয়াল করেন, তাহলেই আপনি ভালোভাবে বুঝতে সক্ষম হবেন কেন এটাকে কৃত্রিমভাবে বানানো সম্ভব না। সেই পর্যায়ক্রমিক বিবর্তনসূত্র থেকেই শক্তভাবে প্রমাণিত হয় যে করোনাভাইরাস প্রকৃতি থেকেই প্রাণীদেহে এসেছে।’
কেউ কেউ বলতে চান, বনাঞ্চলের প্রাণীদেহ থেকে করোনাভাইরাস এনে উহানের ল্যাবে গবেষণা পরিচালিত হয়েছে- ফাউচি সেই দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন।
চীনের উহান শহরের একটি ভাইরোলোজি গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাসের সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারাবাহিকভাবে অভিযোগ করে আসছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ অন্যান্য মার্কিন নেতারা। ট্রাম্প সম্প্রতি অভিযোগ করেন, তার পুনর্নির্বাচিত কর্মসূচি ভণ্ডুল করতেই চীন আগেভাগে আমেরিকাকে সতর্ক করেনি। এছাড়া, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, চীনের গবেষণাগার থেকে নতুন করোনাভাইরাসটির উৎপত্তি ঘটেছে বলে ব্যাপক প্রমাণ রয়েছে।
চীন সরকার আমেরিকার এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। একইসঙ্গে বেইজিং দাবি করছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমেরিকার তুলনায় চীন অনেক বেশি সফলতার পরিচয় দিয়েছে।