করোনা আতঙ্কে কমছে বিদ্যালয়ে উপস্থিতি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম :: করোনা ভাইরাসের প্রভাব এখন দেশের স্কুলগুলোতে পড়তে শুরু করেছে। কমে যাচ্ছে স্টুডেন্ট। শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও অভিভাবিকগণও সচেতন থাকার জন্যই স্কুল বন্ধ করে দিচ্ছেন তাদের ছেলেমেয়েদের। রাজধানীর ইকরা বাংলাদেশ স্কুল-এর অভিভাবক তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আমরা একটা টেনশনে আছি। দিন দিন করোনার থাবা মনে হচ্ছে আমাদেরেও ছুঁয়ে যাচ্ছে। আমরা ভীত। জানি না, বাচ্চাকে নিয়ে আর কত দিন স্কুলে যেতে পারবো।
এদিকে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতি দেখা গেছে। সন্তানকে নিরাপদে রাখতে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে যেতে দিচ্ছেন না। শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও নমনীয় আচরণ করছে। কোনো শিক্ষার্থী উপস্থিত হতে না চাইলে তাদের বাধ্য করা হচ্ছে না। রোববার রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, করোনাভাইরাস আতঙ্কে সকল ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। প্রতিটি ক্লাসে ৭১ জন করে শিক্ষার্থী থাকলেও সেখানে ১৫ থেকে ৩০ জন করে দেখা গেছে। এদিন শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধের নির্ধারিত দিন হওযায় উপস্থিতি একটু বেশি পাওয়া যায়। তাও প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। স্বাভাবিক সময়ে প্রায় ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত থাকে বলে জানান শিক্ষকরা।
এই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র রাহাত জানিয়েছেন, বাবা-মা স্কুলে আসতে নিষেধ করলেও সিলেবাস থেকে পিছিয়ে না পড়তে এক-দুদিন পরপর স্কুলে আসছি। কখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যাই সেই ভয় নিয়েই স্কুলে আসতে হচ্ছে। তাই জরুরিভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা উচিত বলে মনে করি। নতুবা শিক্ষার্থীরা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়বে বলে।
আইডিয়াল স্কুলের সামনে উপস্থিত একাধিক অভিভাবকের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, সন্তানের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাদের গত এক সপ্তাহ থেকে স্কুলে আসতে দিচ্ছেন না। স্কুল থেকে যোগাযোগ করে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে তারা এ বিষয়টি জানিয়েছেন। সন্তানকে বাসায় রেখে মার্চ মাসের টিউশন ফি পরিশোধ করতে তারা এসেছেন।
তারা জানান, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের মহামারি ছড়িয়ে গেছে। আমাদের দেশেও কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। অথচ এখনও সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রেখেছে। ছোট ছেলেমেয়েরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার দায়ভার কে নেবে? এ কারণে সন্তানের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে অনেকে স্কুলে না পাঠিয়ে তার সন্তানকে দিনরাত ঘরের মধ্যে রাখছেন বলেও জানান কেউ কেউ।