কাতারের মধ্যস্ততায় খুলল গাজার রাফাহ ক্রসিং

কাতারের মধ্যস্ততায় খুলল গাজার রাফাহ ক্রসিং

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের রাফাহ ক্রসিংয়ের গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। হামাস, মিসর ও ইসরায়েলের সঙ্গে কাতারের মধ্যস্ততার পর বুধবার (১ নভেম্বর) এই গেট খোলা হয়।

গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো গাজা থেকে বের হওয়ার এই ক্রসিং খুলল। এদিকে রাফাহ হয়ে বিদেশি নাগরিকদের প্রথম দল গাজা ছাড়বে বলে যুক্তরাজ্য জানিয়েছে।

বুধবার পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

কাতারভিত্তিক এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বুধবার রাফাহ ক্রসিং খোলার কয়েক মিনিট আগে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি বলেন, ‘বিদেশি নাগরিকদের প্রথম একটি দল’ গাজা ত্যাগ করবে বলে তিনি আশা করছেন।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘ব্রিটিশ নাগরিকরা বের হতে সক্ষম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাজ্যের দলগুলো তাদের সহায়তা করতে প্রস্তুত। এছাড়া জীবনরক্ষাকারী মানবিক সহায়তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেন গাজায় প্রবেশ করতে পারে, সেটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

অন্যদিকে রয়টার্স বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে রাফাহ ক্রসিং খোলার বিষয়ে মিসর, ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে একটি চুক্তির মধ্যস্থতা করেছে কাতার। এতে করে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড থেকে মানুষকে সীমিতভাবে সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে বলে একটি সূত্র বুধবার রয়টার্সকে জানিয়েছে।

এই চুক্তির ফলে বিদেশি পাসপোর্টধারী নাগরিক এবং কিছু গুরুতর আহত ব্যক্তিকে গাজার রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে মিসরে প্রবেশ করার সুযোগ পাওয়া যাবে। যদিও মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য এই ক্রসিং ঠিক কতক্ষণ খোলা থাকবে তার কোনও সময়সীমা বলা নেই।

তবে এই চুক্তিতে হামাসের হাতে বন্দিদের বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই। হামাস মধ্যস্থতাকারীদের বলেছে, ইসরায়েলে হামলার সময় আটক করা বিদেশি বন্দিদের মধ্যে কয়েকজনকে শিগগিরই ছেড়ে দেওয়া হবে।

হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা টেলিগ্রাম অ্যাপে একথা জানিয়েছেন। অবশ্য মঙ্গলবার এই বার্তা দিলেও বন্দিদের সংখ্যা বা তাদের জাতীয়তা সম্পর্কে আর কোনও বিস্তারিত তথ্য জানাননি তিনি।

রয়টার্স বলছে, মিসর সিনাইয়ের শেখ জুওয়ায়েদে একটি হাসপাতাল প্রস্তুত করেছে বলে মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া মঙ্গলবার রাফাহতে দশটি অ্যাম্বুলেন্সও পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে বুধবার গাজার বৃহত্তম টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী সংস্থা প্যালটেল জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে যোগাযোগ ও ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ইতোমধ্যেই সাড়ে ৮ হাজার ছাড়িয়েছে।

নিহতদের মধ্যে সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি শিশু, ২ হাজারের বেশি নারী এবং প্রায় পাঁচশো বয়স্ক মানুষ রয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো।

তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরসহ বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে। একইসঙ্গে গত ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধও আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *