পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিদেশি ব্যবসায়ীদের একটি আবাসিক হোটেলে হামলার দায় স্বীকা করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এই হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে এই হামলা হয়।
স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে কাবুলের বাণিজ্যিক এলাকা শহর-ই-নাওয়ের ওই হোটেলে এই হামলা হয়। হোটেলটিতে অনেক বেসামরিক মানুষ ছিলেন। বন্দুকধারীরা হোটেলটিতে অতর্কিতে হামলা চালালে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।
আইএস জঙ্গি গোষ্ঠী বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তাদের দুই কর্মী কাবুলে চীনা কূটনীতিক এবং ব্যবসায়ীরা থাকা অবস্থায় একটি বড় হোটেলে হামলা চালায়। যেখানে তারা দুটি ব্যাগে লুকিয়ে রাখা বিস্ফোরকের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটায়। তাদের সদস্যরা হোটেলের অতিথিদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলেও আইএস বিবৃতিতে জানিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এদের মধ্যে একটি বোমা চীনা অতিথিদের পার্টিকে লক্ষ্য করে এবং অন্যটি অভ্যর্থনা হলকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল।
হামলার সময় দুই বিদেশি ব্যবসায়ী হোটেলের বারান্দা থেকে লাফ দিয়ে পালানোর সময় আহত হন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলা হওয়া ওই হোটেলের কাছে থাকা হাসপাতালে ২১ জনকে ভর্তি করানো হয়। এদের মধ্যে তিনজন মারা গিয়েছেন।
তালেবান মুখপাত্র খালিদ জাদরান বলেছেন, ‘হামলাটি কয়েক ঘণ্টা ধরে চালানো হয়। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।’ ঘটনাচক্রে, দূতাবাসের সুরক্ষার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য আফগান উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে চীনের রাষ্ট্রদূতের দেখা করার একদিন পরেই এই হামলার ঘটনা ঘটে।
সোমবার প্রবল বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুলের ওই হোটেল। তার পরেই এক নাগাড়ে গুলি চলতে থাকে হোটেলের ভেতরে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা শহরে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মোজাহিদ এক টুইটার পোস্টে জানিয়েছেন, এই হামলায় কোনো বিদেশি নাগরিক নিহত হননি। তবে প্রাণভয়ে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে দুই বিদেশি নাগরিক আহত হয়েছেন।
আর নিহত তিনজনই হামলাকারী ছিলেন বলে দাবি করেছে তালেবান। কর্তৃপক্ষ বলেছে, তিন হামলাকারী তালেবান নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন।
কাবুলের একজন সাংবাদিক ঘটনাটির একটি ভিডিও টুইটারে পোস্ট করেছেন। ভিডিওটি যাচাই করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হোটেলের একটি তলা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া এক ব্যক্তিকে হোটেলের জানালা দিয়ে লাফ দিতে দেখা গেছে। তিনি সম্ভবত হামলা থেকে বাঁচতে জানালা দিয়ে লাফ দিয়েছিলেন।
তালেবান সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হোটেলটির নাম ‘লংগান হোটেল’। আবাসিক এই হোটেলে বেশির ভাগ চীনা ও অন্যান্য বিদেশিরা থাকেন।