পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি ট্যাংক ও বিমান হামলায় অন্তত ১৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় হাসপাতাল সূত্র হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছে। একই সময়ে মিসর সীমান্তের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহতে ট্যাংক নিয়ে আরও অগ্রসর হয়েছে ইসরায়েলি সেনা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাতের পাশাপাশি লেবানন সীমান্তেও হামাসের মিত্র হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর লড়াই তীব্রতর হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলাবর্ষণে আটজন নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে গাজা সিটিতে একটি বাড়িতে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন ছয়জন। উত্তরাঞ্চলীয় বেইত হনুন শহরে একটি গাড়িতে হামলা চালালে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হন।
তবে এসব হামলায় কতজন যোদ্ধা আর কতজন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ ইসরায়েলি বাহিনী মে মাস থেকে অভিযান চালিয়ে আসছে। সেখানেও ট্যাংক ও বিমান হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শহরের পূর্বাংশে ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং ইসরায়েলি বাহিনী সেখানে বেশ কয়েকটি বাড়ি ধ্বংস করেছে।
হামাসের সশস্ত্র শাখা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা রাফাহতে তানুর এলাকায় প্রবেশ করা ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, শহরটিতে তারা শত শত ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করেছে, সুড়ঙ্গ ও বিস্ফোরক খুঁজে বের করেছে এবং সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করেছে।
ইসরায়েলের দাবি, তারা রাফাহ ও মিসরের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তরেখার নিয়ন্ত্রণ রাখতে চায়। এই দাবি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চললেও এখনও কোনও চূড়ান্ত সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
যুদ্ধবিরতির দুই প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো, ইসরায়েলের ফিলাডেলফি করিডোরে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার দাবি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির শর্ত।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়। এরপর ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক অভিযান শুরু করে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি অভিযানে ৪১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ২৩ লাখ জনসংখ্যার প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যুদ্ধের ফলে খাদ্য সংকট ও গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযুক্ত করা হলেও ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
ইসরায়েলের দাবি, তারা হামাসকে নির্মূল করতে চায়। কারণ হামাসকে তারা তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করে।