গাজায় কোনও স্থানই নিরাপদ নয় : জাতিসংঘ

গাজায় কোনও স্থানই নিরাপদ নয় : জাতিসংঘ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে কোনও স্থানই নিরাপদ নয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয়কারী লিন হেস্টিংস এই মন্তব্য করেছেন। গাজাবাসীদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

গাজা শহরের লোকজনকে চলে যেতে বলে ইসরায়েল যে বক্তব্য দিয়েছে সেটির প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) তিনি এই মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

লিন হেস্টিংস বলেছেন, ‘(হামলা থেকে বাঁচতে গাজার) মানুষ কোথাও সরে যেতে পারে না। কারণ তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বা কোনও নিরাপদ জায়গায় তারা সরে যেতে অক্ষম। গাজার এসব মানুষের জন্য (নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার) আগাম সতর্কতা আসলে কোনও পার্থক্যই সৃষ্টি করে না।’

ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের এই মানবিক সমন্বয়কারী বলেন, ‘যখন মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার রুটগুলোতে বোমাবর্ষণ করা হয়, যখন উত্তর এবং দক্ষিণের লোকেরা সংঘাতের মধ্যে পড়ে যায়, যখন বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর অভাব দেখা দেয় এবং যখন বিপদাপন্ন মানুষের তাদের বাড়ি-ঘরে ফিরে আসার কোনও আশ্বাস থাকে না, তখন মানুষের কাছে অসম্ভব কিছু বিকল্প ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।’

লিন হেস্টিংস আরও বলেন, সশস্ত্র সংঘাত আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়া উচিত। তার ভাষায়, ‘এর অর্থ হলো বেসামরিক নাগরিকদের অবশ্যই সুরক্ষিত থাকতে হবে এবং বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহের সুযোগ থাকতে হবে। সেটা তারা যেখানেই থাকুক না কেন এবং তারা নিজেরাই থাকার জন্য বেছে নিন না কেন।’

তিনি হামাসের হাতে আটক সমস্ত বন্দিকে অবিলম্বে এবং নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেওয়ারও দাবি জানান।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। তাদের অবিরাম নির্বিচার এই হামলায় এখন পর্যন্ত সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা দুই হাজার সাতশোর বেশি। অর্থাৎ ইসরায়েলের হামলায় যেসব ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন তার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু।

এছাড়া ইসরায়েলের হামলায় গাজায় শুধুমাত্র গত একদিনে শিশুসহ ৭৫৬ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় একদিনে সর্বোচ্চ ৭০৪ জনের প্রাণহানির ঘটনার রেকর্ড হয়েছিল গত সোমবার।

১৯ দিন ধরে চলে আসা এই যুদ্ধে আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১৮ হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।

এছাড়া গত ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধও আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *