পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির প্রয়াসের মধ্যস্ততা থেকে সরে দাঁড়ানোর খবরকে অস্বীকার করেছে কাতার। তারা জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির চেষ্টা স্থবির হয়ে আছে। এছাড়া ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের নেতাদের কাতার থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, সেটিও সত্য নয় বলে দেশটি জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ বিন মোহাম্মদ আল-আনসারি বলেছেন, ‘গাজার যুদ্ধবিরতির মধ্যস্ততা থেকে কাতার নিজেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা ঠিক নয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘কাতার একটি চুক্তিতে পৌঁছার শেষ চেষ্টার সময় ১০ দিন আগে পক্ষগুলোকে জানিয়েছে যে এবার কোনো সমঝোতা না হলে সে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে মধ্যস্ততাচেষ্টা স্থগিত করবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, দোহা ‘পক্ষগুলো যখন নৃশংস যুদ্ধ বন্ধ করতে আগ্রহী ও আন্তরিক হবে, তখনই এর অংশীদারদের সাথে যোগ দেবে।’
মুখপাত্র বলেন, কাতার ‘মধ্যস্ততা করাকে তাকে ব্ল্যাকমেইল করার কারণ হিসেবে গ্রহণ করবে না।’
আল আনসারি আরো বলেন, দোহার হামাসের রাজনৈতিক অফিস বন্ধ করে দেয়ার খবরটিও ঠিক নয়। তিনি বলেন, এই অফিসের মূল উদ্দেশ্য হলো সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে ‘যোগাযোগের ব্যবস্থা’ করা। তিনি বলেন, এই চ্যানেল ব্যবহার করেই অতীতে যুদ্ধবিরতি অর্জিত হয়েছিল।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সরকারি সূত্র থেকে তথ্য পাওয়ার দরকার আছে।
এর আগে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়ার খবরে বলা হয়, গাজায় যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করার অবস্থান থেকে সরে আসছে কাতার। এমনও বলা হয় যে কাতার জানিয়েছে, হামাস ও ইসরাইল আলোচনা টেবিলে ফিরে আসার ‘আন্তরিক ইচ্ছা’ প্রদর্শন না করা পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য মধ্যস্থতা করার বিরত থাকবে কাতার। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টায় এটি সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করা হচ্ছে।
রয়টার্সকে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, উপসাগরীয় দেশটি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে দোহায় হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয়টি ‘আর তার উদ্দেশ্য পূরণ করছে না।’ এটি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের জন্য একটি বড় রকমের ধাক্কা। উল্লেখ্য, গ্রুপটির শীর্ষ নেতাদের ইসরাইল হত্যা করেছে।
কাতার, যুক্তরাষ্ট্র এবং মিসরের সাথে গাজায় বছরব্যাপী লড়াইয়ে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে আলোচনা পর্বগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অবশ্য, এখন পর্যন্ত সেগুলো ফলপ্রসূ হয়নি। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে হওয়া সর্বসাম্প্রতিক আলোচনায় হামাস স্বল্পমেয়াদি একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে কোনো চুক্তিতে আসতে ব্যর্থ হয়।
কর্মকর্তাটি বলেন, ‘কাতার সংঘাতের শুরু থেকেই বলছে তারা কেবল তখনই মধ্যস্থতা করতে পারে যখন উভয় পক্ষই একটি সমাধান খোঁজার জন্য প্রকৃত আগ্রহ প্রদর্শন করে।’ তিনি আরো বলেন, কাতার তার সিদ্ধান্তের বিষয়ে হামাস, ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে অবহিত করেছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বলেন, হামাস যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী বিনিময় চুক্তির সর্বসাম্প্রতিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর তাদের দোহায় উপস্থিতি আর গ্রহণযোগ্য নয়।
সূত্র : আনাদুলু অ্যাজেন্সি ও ভিওএ