পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে আংশিক সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে ইসরায়েল। গাজায় আসন্ন অভিযানের আগে আরও শক্তি অর্জন করে এসব সেনাদের নতুনভাবে যুদ্ধের ময়দানে নামানোর লক্ষ্যে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হচ্ছে। সোমবার (১ জানুয়ারি) ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
এর আগে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানিয়েছিলেন, চলতি সপ্তাহে বেশ কয়েকজন সেনা গাজা ছাড়বে। ২০২৪ সালে গাজায় সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা থেকে এমন মন্তব্য করেছিলেন হাগারি। তিনি বলছিলেন, একটি অতিরিক্ত মিশন থাকবে এবং বছরের বাকি সময় সংঘাত কেমন চলবে তার জন্য আইডিএফকে অবশ্যই আগে থেকে পরিকল্পনা করতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলের অর্থনীতিতে সহায়তা করার জন্য আংশিকভাবে সংরক্ষিত যোদ্ধাদের বেসামরিক জীবনে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেননা, গাজায় চলমান এ যুদ্ধ নতুন বছরে আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, যে পাঁচটি ব্রিগেডকে প্রত্যাহার করা হয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে একটি সম্ভাব্য দ্বিতীয় ফ্রন্টে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণে গাজা হামাসের চালানো আন্তঃসীমান্ত হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজা উপত্যকায় ওইদিনই পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েল। এই সামরিক অভিযান তিনটি প্রধান পর্যায়ে চলবে বলে জানিয়েছিল ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। তারা বলেছিলেন, প্রথম ধাপটি ছিল তীব্র গোলাবর্ষণ—যাতে তাদের স্থলবাহিনীর প্রবেশ পথ পরিষ্কার হয় এবং বেসামরিকরা ওই অঞ্চল থেকে সরে যায়। দ্বিতীয়টি ছিল সামরিক আগ্রাসন, যেটি ২৭ অক্টোবর শুরু হয়েছিল।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীরা লুকানো সুড়ঙ্গ এবং বাঙ্কার থেকে তাদের অতর্কিত হামলা চালিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক এবং সেনারা গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ অংশই এখন দখলে নিয়েছে। এখন তৃতীয় ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে সামরিক বাহিনী।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজা জেলার কথা উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এতে কমপক্ষে ছয় মাস সময় লাগবে, এবং সন্ত্রাসীদের নির্মূলে তাদের বিরুদ্ধে তীব্র মিশন চালানো হবে। শাজাইয়ার আকাশে শান্তির পায়রা ওড়ানোর বিষয়ে কেউ কথা বলছে না।’
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ১১ সপ্তাহের চলমান এ সংঘাতে গাজায় এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, চলমান এই সংঘাতে গাজার ২৪ লাখ বাসিন্দারে মধ্যে শতকরা ৮৫ শতাংশই এখন বাস্তুচ্যুত।