গাজীপুরে ৯ পোশাক কারখানায় হামলা, ১১টিতে ছুটি ঘোষণা

গাজীপুরে ৯ পোশাক কারখানায় হামলা, ১১টিতে ছুটি ঘোষণা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : গাজীপুরের টঙ্গীতে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন দুই শতাধিক লোকজন। এ সময় নয়টি পোশাক কারখানায় ভাঙচুর চালিয়েছেন তারা। সম্প্রতি তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং পুনরায় চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাদের কয়েকজন।

এ অবস্থায় ১১টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় বাদশা মিয়া ও (২১) আরেক নারী পোশাকশ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদের টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত টঙ্গীর বিসিক এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।

ছুটি ঘোষণা করা কারখানাগুলো হলো- বিসিক এলাকার টসি নিট ফেব্রিকস লিমিটেড, ন্যাশনাল কম্পোজিট লিমিটেড, পেট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেলস লিমিটেড, বেলিসিমা অ্যাপারেলস লিমিটেড, জিন্স অ্যান্ড পোলো লিমিটেড, টেঙ্গন গার্মেন্টস লিমিটেড, রেডিসন গার্মেন্টস লিমিটেড, আরবিএস গার্মেন্টস লিমিটেড, গার্ডেন টেক্সটাইল লিমিটেড, সুমি অ্যাপারেলস লিমিটেড ও তাজকিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেড।

বিক্ষোভকারী কয়েকজন যুবক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকালে টঙ্গীর বিসিক শিল্প এলাকার সব পোশাক কারখানার শ্রমিক কাজে যোগ দেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দুই শতাধিক লোকজন বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ১১টি পোশাক কারখানার প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। তারা কারখানার নিয়মিত শ্রমিকদের তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানালে অস্বীকৃতি জানান শ্রমিকরা। কিছুক্ষণ পরই নয়টি কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালান তারা। ভাঙচুর ঠেকাতে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বাধা দিলে ওসব ব্যক্তির সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সেইসঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ অবস্থায় দুপুর ২টার দিকে ১১টি কারখানা কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা করে। পরে ওসব লোকজন টঙ্গীর বিসিক এলাকার পানির ট্যাংক এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভকারী মো. রনি বলেন, ‌‘চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে আমরা কয়েক সপ্তাহ আগেও বিক্ষোভ করেছিলাম। কারখানাগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। আমরা শ্রমিকদের ডাকলেও আমাদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দেয়নি। উল্টো প্রতিবাদ করেছেন। তাই ভাঙচুর চালানো হয়। দাবি না মানা পর্যন্ত কোনও কারখানায় শ্রমিকদের ঢুকতে দেবো না আমরা। আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে।’

তাজকিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক হেমায়েত উদ্দিন বলেন, ‘তারা বহিরাগত। কোন কারখানার শ্রমিক আমরা জানি না। কারখানার সামনে জড়ো হয়ে প্রধান ফটকে ভাঙচুর চালালে ক্ষতি এড়াতে কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছি আমরা।’

গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন বলেন, ‘চাকরিতে বৈষম্য ও পুরুষ শ্রমিকদের নিয়োগে অগ্রাধিকারের দাবিতে কয়েকশ লোকজন নয়টি কারখানায় ভাঙচুর চালিয়েছেন। এ অবস্থায় ১১টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পরে তারা টঙ্গীর বিসিকের একটি সড়কে অবস্থান নিলে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারা চলে যাওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Related Articles