গোপনে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

গোপনে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : গোপনে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। গত বছরের মতো এ বছরও বছরের শেষ দিকে এসে সরবরাহ ঘাটতির অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে পেঁয়াজের দাম।

সোমবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর খুচরা বাজারে একদিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। আর সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৪-৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

ভোক্তারা বলছেন, বিক্রেতারা সুযোগ পেলেই ভোক্তার পকেট কাটে। বাজারে সরবরাহ ঠিক থাকলেও করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তারা নীরবে পেঁয়াজের দাম বাড়াতে শুরু করেছে। তাই গত বছরের মতো যাতে ভোক্তারা দুর্ভোগে না পড়ে সে বিষয়ে এখন থেকেই নজরদারি বাড়াতে হবে।

বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে তা তদারকির মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে শাস্তির আওতায় এনে দাম নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। তিনি বলেন, অধিদফতরের মহাপরিচালকের নির্দেশে রাজধানীসহ সারা দেশে পণ্যমূল্য যাতে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে সেজন্য নিয়মিত বজার তদারকি করা হচ্ছে।

এদিকে সোমবার (৩১ আগস্ট) সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজারমূল্য তালিকাতেও পেঁয়াজের দাম বাড়ার চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। টিসিবি বলছে, রাজধানীর কাঁচাবাজারে একদিনের ব্যবধানে কেজিতে দেশি পেঁয়াজ ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মাসের ব্যবধানে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি দরে।

রাজধানীর নয়াবাজার, রামপুরা বাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা। একটু ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে একদিন আগে (রোববার) এই দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি মান ও আকারভেদে ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া রাজধানীর খুচরা বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয় ২৫-৩০ টাকায়। নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা আঁখি আক্তার বলেন, বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তি। এ সুযোগে পুরনো পেঁয়াজের সিন্ডিকেট করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

তারা গত বছরের মতো এ বছরও সরবরাহ কমের অজুহাতে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বাড়াতে শুরু করেছে। এখন থেকেই সরকারি নজরদারি বাড়ানোর দাবি করে তিনি বলেন, যারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে তাদের কঠিন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যাতে নিত্যপণ্য নিয়ে কেউ অসাধুতা করতে না পারে।

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. সিকান্দার আলী বলেন, সামনে পেঁয়াজের মৌসুম। আর গত বছর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত যে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসে তা শেষের দিকে। তাই সরবরাহ একটু কম। এ কারণে দাম বাড়তি।

তবে সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে। তিনি জানান, এটি পেঁয়াজের মৌসুম না। প্রতিবছর দেশে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি শীত মৌসুমে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করে। তাই এই শেষ সময়ে দাম কিছুটা বেড়েছে।

এদিকে টিসিবির দৈনিক বাজার পণ্যমূল্য তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত বছর এই দিনে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ রাজধানীর খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ৫০-৫৫ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৪৮-৫০ টাকা।

দেখা যায়, গত বছর আগস্টের শেষের দিকে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। সেপ্টেম্বরে পণ্যটির দাম একটু কমলেও ডিসেম্বরে পণ্যটির দাম লাগামছাড়া হয়ে যায়। পরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি প্রতিকেজি সর্বোচ্চ ২৫০-২৭০ টাকায় বিক্রি হয়।

সূত্র : যুগান্তর

/এএ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *