ঘাতক নূর চৌধুরীকে দ্রুত ফিরিয়ে আনা হোক

ঘাতক নূর চৌধুরীকে দ্রুত ফিরিয়ে আনা হোক

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার নীলনকশা যারা তৈরী করেছিল, যারা ঘাতকের লেবাসে নিঃশ্বেষ করেছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, তাদের অন্যতম নূর চৌধুরী। তার সঙ্গে এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অনেকেই ফাঁসির মঞ্চে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে। কিন্তু নূর চৌধুরী ভাগ্যক্রমে সর্বশেষ কানাডার নাগরিক হয়ে এখনো বহাল তবিয়তে বেঁচে আছেন। এটি বিস্ময়কর।

আরও আশ্চর্যের হলো, রাজনৈতিক অনুকম্পা পেয়ে পরবর্তীকালে তারা বুক ফুলিয়ে হত্যাকাণ্ডে কথা স্বীকারও করেছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আবার ক্ষমতায় এসে সেই হত্যাকাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করে। দীর্ঘ আইনিপ্রক্রিয়ার পর আদালত খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ঘোষণা করেন। উচ্চ আদালতেও সর্বোচ্চ শাস্তি বহাল থাকায় ২০১০ সালে চারজনের মৃৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়। কিন্তু নূর চৌধুরীসহ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ছয়জন এখনো পলাতক রয়েছে।

নূর চৌধুরী ১৯৯৬ সাল থেকে কানাডায় অবস্থান করছে। কানাডার আইন অনুযায়ী মৃত্যুদ-ের মুখোমুখি হবে-জানা থাকলে কাউকে ফেরত দেওয়া হয় না। হত্যাকাণ্ডপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তা কিভাবে কানাডায় বসবাস করছে সে বিষয়টি জানতে চেয়েছিল বাংলাদেশ; কিন্তু কানাডার সরকার ‘জনস্বার্থ রক্ষার’ অজুহাতে সেই তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এরপর বাংলাদেশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার কানাডার ফেডারেল আদালত রায় দিয়েছেন, এতে জনস্বার্থ বিঘ্নিত হবে না এবং সরকারকে তথ্য প্রদানের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। এ রায় নূর চৌধুরীকে ফেরানোর ক্ষেত্রে একধাপ অগ্রগতি হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।

সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সেদিন যে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করা হয়েছিল, তা থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে হবে। পলাতক সব খুনিকে খুঁজে বের করে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে হবে। এ জন্য সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। কানাডার সরকার এবং আদালতকেও বিবেচনা করতে হবে যে একজন আত্মস্বীকৃত খুনি শুধু কিছু আইনি মারপ্যাঁচের কারণে দ- এড়িয়ে যেতে পারে না। মৃত্যুদ-ের বিরোধিতা করার অর্থ এই নয় যে এক দেশের খুনি আরেক দেশে গিয়ে স্বাধীন জীবনযাপন করবে, আরাম-আয়েশ করবে। এতে মানুষের সর্বজনীন ন্যায়বিচারের বোধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কানাডার ফেডারেল আদালত যে রায় দিয়েছেন আমরা তাতে সন্তোষ প্রকাশ করছি। এই ঘৃণ্য অপরাধীকে প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রেও কানাডার আদালত ন্যায়বিচারের দ-কে সমুন্নত রাখবেন বলে আমরা আশাবাদি।

পলাতক ছয়জনের আরেকজন রাশেদ চৌধুরী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। তাকেও দ্রুত ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। বাকি চারজন কোথায় আছে, তা এখনো শনাক্ত করা যায়নি। এটি অবশ্যই আমাদের বড় ধরনের ব্যর্থতা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের রায় সম্পূর্ণ কার্যকর করার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে জাতিকে কলঙ্কের কালিমা থেকে মুক্ত করা সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি।

ইনসার্ট : পলাতক ছয়জনের আরেকজন রাশেদ চৌধুরী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। তাকেও দ্রুত ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। বাকি চারজন কোথায় আছে, তা এখনো শনাক্ত করা যায়নি। এটি অবশ্যই আমাদের বড় ধরনের ব্যর্থতা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের রায় সম্পূর্ণ কার্যকর করার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে জাতিকে কলঙ্কের কালিমা থেকে মুক্ত করা সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *