জাতিসংঘে বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যার কথা তুলে ধরলেন ড. ইউনূস

জাতিসংঘে বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যার কথা তুলে ধরলেন ড. ইউনূস

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দফতরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে সাধারণ আলোচনায় জলবায়ু-পরিবর্তন বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় এর প্রভাবে ক্ষুদ্র কৃষক এবং প্রান্তিক পর্যায়ে জীবিকা অন্বেষণকারীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন। এসময় তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যার চিত্রও তুলে ধরেন।

বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেন ড. ইউনূস। পৃথিবীতে বৈশ্বিক অগ্রাধিকারগুলোকে সবাইকে সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সবার অস্তিত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ। এই গ্রীষ্মে সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গকারী তাপপ্রবাহ আমাদের জলবায়ুজনিত পরিবর্তনের কথা স্পষ্টভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। আমাদের যা প্রয়োজন, তা হলো জলবায়ু সম্পর্কিত ন্যায়বিচার, যাতে করে দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত, উদাসীন আচরণ কিংবা এর মাধ্যমে সাধিত ক্ষতির বিষয়ে যারা সংশ্লিষ্ট তাদের দায়বদ্ধ করা যায়।

জলবায়ু-পরিবর্তনজনিত দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবগুলো অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা জীববৈচিত্র্য হারাচ্ছি, প্যাথোজেনের পরিবর্তনের ফলে নতুন রোগ বাড়ছে, কৃষি ক্ষেত্রে চাপ বাড়ছে, ক্রমহ্রাসমান পানিসম্পদ ঝুঁকিতে ফেলছে আমাদের বাসযোগ্যতাকে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং লবণাক্ততা আমাদের বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করছে প্রতিনিয়ত। ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও মাত্রা বৃদ্ধির কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে, তাকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ক্ষুদ্র কৃষক এবং প্রান্তিক পর্যায়ে জীবিকা অন্বেষণকারীরা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। আমি আজ যখন এই বিশ্বসভায় কথা বলছি, তখন বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে ৫০ লাখেরও অধিক মানুষ তাদের জীবদ্দশায় হওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করছেন।

এসময় জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস দেওয়া তথ্য প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেন, মহাসচিব গুতেরেস আমাদের দেখিয়েছেন যে বিদ্যমান পরিক্রমা অব্যাহত থাকলে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির দিকে অগ্রসর হবে। তাই বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে অভিযোজনের জন্য ব্যাপক বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও, উদ্ভাবনী শক্তির প্রয়োগ ও অতিরিক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’-কে কার্যকর করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Related Articles