জাতিসংঘ : তিন বছরে নতুন দরিদ্র ১৬ কোটি মানুষ

জাতিসংঘ : তিন বছরে নতুন দরিদ্র ১৬ কোটি মানুষ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : কোভিড–১৯ মহামারী, দৈনন্দিন ব্যয় বৃদ্ধি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২০ সাল থেকে এ বছর পর্যন্ত তিন বছরে বিশ্ব জুড়ে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এমন তথ্য জানিয়েছে।

আর এ সংকট থেকে সাধারণ মানুষদের রক্ষায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণ পরিশোধ কার্যক্রম সাময়িক স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

ইউএনডিপির প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন করে দারিদ্রের শিকার সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে অতি দারিদ্রসীমার নিচে চলে যাবে সাড়ে ৭ কোটি মানুষ। দিনে যাদের আয় ২.১৫ মার্কিন ডলারেরও (২৩৩ টাকা) কম। এছাড়া নতুন করে দারিদ্রসীমায় নেমে যাওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে ৯ কোটিতে। দিনে যাদের আয় ৩.৬৫ ডলারের (৩৯৫ টাকা) বেশি নয়।

এতে বলা হয়, সবচেয়ে দরিদ্র মানুষই উল্লেখিত অভিঘাতের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০২৩ শেষেও এসব মানুষ কোভিড–১৯ মহামারির আগে তাদের আয়ের অবস্থায় ফিরতে পারবে না।

ইউএনডিপির প্রধান আখিম স্টেইনার জানান, তিন বছর ধরে যেসব দেশ সামাজিক সুরক্ষা খাতে বিনিয়োগ করেছে সেসব দেশ বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে দারিদ্রসীমায় অবনমন থেকে রক্ষা করতে পেরেছে।

তিনি জানান, তুলনামূলকভাবে উচ্চমাত্রায় ঋণগ্রস্ত দেশগুলো তাদের জনগোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষা খাতে ততটা ব্যয় করতে পারেনি। কারণ উচ্চমাত্রায় ঋণের সঙ্গে সামাজিক খাতে অপ্রতুল অর্থ ব্যয়ের একটি সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণেই উচ্চ মাত্রায় ঋণগ্রস্ত দেশগুলোতে নতুন করে দারিদ্রসীমায় নেমে যাওয়া জনগোষ্ঠীর হার আশঙ্কাজনক বেশি।

বুধবার জাতিসংঘের প্রকাশিত অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৩.৩ বিলিয়ন মানুষ– যেটা বিশ্বের মোট মানবগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক– এমন দেশসমূহে বসবাস করে যেসব দেশ বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করে। তার চেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ রাখে তাদের ঋণ পরিশোধে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন করে দরিদ্র হওয়া সাড়ে ১৬ কোটি মানুষকে স্বচ্ছল করতে বছরে ১৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় করতে হবে। যা বিশ্বের মোট উৎপাদনের ০.০০০৯%।

তবে তাদের অবস্থা পুরোপুরি খারাপ হওয়ার আগে যদি ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তবে এতে ১০৭ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে, যা বিশ্ব জিডিপির ০.০৬৫%।

এ সপ্তাহের শুরুর দিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থার নিন্দা করেছেন। তার মতে বর্তমানে প্রচলিত সেকেলে আর্থিক ব্যবস্থা ঔপনিবেশিক শক্তির গতিশীলতাকে তুলে ধরছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *