ঢাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

ঢাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের মারধর ও হামলার অভিযোগে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের পরিবহন শাখার চালক খলিলুর রহমান বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা বহু শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১১ জুলাই আন্দোলনের এক পর্যায়ে শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে অবৈধ সমাবেশ করে দাঙ্গা ও সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেন আন্দোলনকারীরা। তারা শাহবাগে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। ফলে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা সাধারন জখম হন।

এজাহারে আরও বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের শাহবাগ মোড়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিএসএমএমইউ’র কাছে পার্ক করা একটি এপিসি ও জলকামান ঘিরে ফেলে আক্রমণাত্মক আচরণ করে। তারা জলকামান চালককে জোর করে বের করে তা ভাঙচুর করলে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে আছে এপিসি ২৫-এর সামনের দুটি এসএস স্ট্যান্ড, রেডিও অ্যান্টেনা, পেছনের হুইল গার্ড এবং জলকামানের বাম দিকের আয়না ভাঙা।

মামলার এজাহারে বলা হয়, পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, বিক্ষোভকারীরা আরও হিংস্র হয়ে ওঠে, পুলিশের দিকে পানির বোতল, টেনিস বল ও ইট নিক্ষেপ করেন, যার ফলে অনেক কর্মকর্তা আহত হন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অজ্ঞাত শিক্ষার্থীরা শাহবাগে বিক্ষোভে যোগ দিয়ে বারডেম হাসপাতালের গেটের কাছে একটি ব্যারিকেড ভেঙে আরও পুলিশ সদস্যকে আহত করেন, স্লোগান দেন এবং গালিগালাজ করেন।

পাশাপাশি বিক্ষোভকারীরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার গুজব ছড়িয়ে এবং শাহবাগ থানায় আটকের অভিযোগ তুলে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেন বলেও উল্লেখ করা হয় এজাহারে।

২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা তুলে দিয়ে জারি করা পরিপত্র গত ৫ জুন হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণার পর সেই পরিপত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে, অর্থাৎ কোটা তুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা মাঠে নামে। পরে তারা কোটা সংস্কারের দাবি সামনে নিয়ে আসে।

দাবি আদায়ে গত সপ্তাহের মঙ্গলবার বাদ দিয়ে প্রতি দিনই বাংলা ব্লকেড নামে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে মানুষের চলাচলে ভোগান্তি চরমে ওঠে।

এমন পরিস্থিতিতে বুধবার কোটা নিয়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছে দিয়েছে আপিল বিভাগ। তারপরও সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।

Related Articles