থানা ঘেরাওয়ের হুমকি দিলেন বুলবুল

থানা ঘেরাওয়ের হুমকি দিলেন বুলবুল

পাথেয় রিপোর্ট : আর কোনো নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হলে থানা এবং ভোটের দিন কেন্দ্র ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। শনিবার সকালে নগরীর মনি চত্বর এলাকায় গণসংযোগে গিয়ে তিনি ভোট জালিয়াতির পরিকল্পনা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনকেও হুঁশিয়ার করেন।

ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বুলবুল বলেন, ‘ঢাকা থেকে ব্যালট পেপার সিল দিয়ে রাজশাহীতে আনা হচ্ছে। আমরা তিন দিন আগেও বলেছি, ৩ লাখ ১৮ হাজারের বেশি ব্যালট যদি এখানে পাওয়া যায়, নির্বাচন কমিশনের ইট থাকবে কি না, আমরা বলতে পারব না।’

‘কালো গাড়িতে করে নৌকায় সিল মারা ব্যালট আনা হচ্ছে’, বলে অভিযোগ করেন গত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে পাঁচ বছর রাজশাহীর মেয়রের দায়িত্বপালনকারী এই বিএনপি নেতা।

‘রাজশাহীতে ১০টি কালো মাইক্রোবাস ঘুরছে। যারা খুলনা ও গাজীপুরে ভোট ডাকাতির মূল হোতা ছিল। তারা এখনে আবার আসছে, খালেক সাহেবের (খুলনার মেয়র) ও জাহাঙ্গীরের (গাজীপুরের) নির্দেশে।’

‘সে কারণে বলতে চাই, এই কালো গাড়িগুলো এখনই ধরা উচিত বা শহর থেকে বিদায় করা উচিত। রাজশাহীর ভোটে যদি নিরবচ্ছিন্ন অবস্থান তৈরি না হয়, তাহলে রাজশাহীতে ২০ দলীয় ঐক্যজোটের যে ভূমিকা থাকবে, সেটি কিন্তু অকল্পনীয়।’

বুলবুলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী এ এইচ খায়রুজ্জামান লিটন ইতোমধ্যে এই অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি বুলবুল বলেন, ‘আগামী ৩০ তারিখের আগে যদি বিএনপি বা জোটের নেতাকর্মীদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, তা হলে যে থানায় নেওয়া হবে, সে থানা ঘেরাও হবে।’

নির্বাচনের দিন আওয়ামী লীগ যদি ভোটকেন্দ্র দখল করে তা হলে আপনারা কী করবেন- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরাও ভোটকেন্দ্র দখল করবো। নির্বাচন কমিশনকে সেদিন কৈফিয়ত দিতে হবে। ঘেরাও কর্মসূচি হবে। নির্বাচন বাদ দিয়ে সেদিন ঘেরাও কর্মসূচি হবে।’

বরিশাল ও সিলেটের সঙ্গে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও ভোট গ্রহণ করা হবে ৩০ জুলাই। মেয়র পদের পাশাপাশি ৩০টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর ও ১০জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর বাছাইয়ে রায় দেবেন রাজশাহী নগরবাসী।

ওই ভোট ঘিরে পুলিশ আওয়ামী লীগের ‘অঙ্গ সংগঠনের মতো’ কাজ করছে অভিযোগ করে ধানের শীষের প্রার্থী বলেন, ‘আজকে পুলিশ প্রশাসন আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গ সংগঠন। আজকে ডিবি পুলিশ মনে হচ্ছে, পুলিশের সদস্য নয়, রাষ্ট্রের কর্মচারী নয়। তারা আওয়ামী লীগের দালালি করতে এখানে এসেছে।

ডিবি পুলিশের কর্মকর্তারা বিএনপির নারী কর্মীদের বাড়িতে গিয়েও হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

‘নির্বাচন কমিশনের যদি লজ্জা থাকে, তবে একই পুলিশ প্রশাসনকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হোক,’ ইসির উদ্দেশে বলেন তিনি।

রাজশাহীর পরিবেশ ‘শান্ত ও গণতান্ত্রিক’ পরিবেশ রাখার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানালেও তা ইসি গ্রহণ না করায় হতাশা প্রকাশ করেন বুলবুল।

‘রাজশাহীর পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার স্বার্থে এখনও সেনাবাহিনী নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। কারণ তিনি যেন রাজশাহীর নির্বাচন দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একটি মডেল তৈরি করতে পারেন।’

আনুষ্ঠানিক প্রচারের শেষ দিন শনিবার সকালে নগরীর জেলগেট থেকে গণসংযোগ শুরু করেন বুলবুল। সেখানে সিপাহী পাড়া, ফায়ার সার্ভিসের মোড়, সাহেব বাজার এলাকার মনিচত্বর, কাঁচা বাজার, মাছ বাজার, মাস্টারপাড়া পাইকারী বাজার ও সোনাদীঘির মোড়ে ভোটারদের কাছে ধানের শীষের পক্ষে সমর্থন চান তিনি।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমান মিনু, পুঠিয়া দুর্গাপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাদিম মোস্তফা, মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে ছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *